বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১২

নন্দিত নরক থেকে পুষ্পিত বিদায়

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ:
নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাঁর আপন ঠিকানায়। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। রেখে গেছেন অসামান্য অবদান। সাহিত্য, নাটক ও সিনেমা জগতে এনেছেন নতুন বাঁক। হাতে ফুল, চোখে জল নিয়ে আমার তাঁকে সমাহিত করেছি তাঁর প্রিয় নুহাশ পল্লীতে। আলোকিত নত্রের আকস্মিক পতনে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।
‘শোয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি, তুমি ঘুমাইছ নাকি’- হাজার ভক্তের ডাকেও পাখি সাড়া দেয় না। পাখি চিরনিদ্রায় শায়িত। তিনি চলে গেলেন ১৯ জুলাই ১১ টা ২০ মিনিটে। তাঁকে সমাহিত করা হয় ২৪ জুলাই বাদ জোহর।
তিনি আসবেন ‘চান্নি পসর রাতে’। ‘ময়ূরাী’র তীরে হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে। তিনি বেঁচে থাকবেন হিমু, মিসির আলী আর বাকের ভাইদের মাঝে। দহন সাহিত্যপত্রে’র প থেকে হুমায়ূন আহমেদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১২

যাওয়া তো নয় যাওয়া

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
তুমি কোন অভিমানে চলে গেলে সব ফেলে?
তোমার শূন্যতায় ‘ময়ূরাী’র বুকে চর জাগে।
হারানোর বেদনায় নিঃসঙ্গ বসে থাকে হিমুÑ
অযতেœ ঝরে পরে ‘হিমুর হাতে সাতটি নীলপদ্ম’।
মিসির আলী, বাকের ভাই হয়ে যায় নিরুদ্দেশ,
নিস্তব্ধ নুহাশপল্লী-কুতুবপুর,শোকাহত বাংলাদেশ।
‘যাওয়া তো নয় যাওয়া’-তবুও কী চলে যেতে হয়?
চলেই যদি যাবে ণিকের তরে কেন এসেছিলে তবে?
তুমি কী আর ফিরবে না এই ‘শ্যামল ছায়া’র মাঠে।
কেন ‘নন্দিত নরকে’ রেখে গেলে ‘আগুনের পরশমনি’,
এত বেহেশতি সুখ ছোঁয়ার পরেও ‘সবাই গেছে বনে’।
তুমিও কী তাই চলে গেলে আজ একাকী আনমনে।

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
কালকিনি, মাদারীপুর
০১৭২৫৪৩০৭৬৩।

মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই, ২০১২

এখানে আমি একা

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
আসলে এখানে আমি একা, এখানে আমার কেউ নেই।
আমি বারবার ভুলে যাই- এখানে আমি শুধুই পরবাসী।
এখানে স্বার্থের বাইরে এক চিলতে সম্পর্ক নেই।
এখানে নেই ভালোবাসার লেনদেন- সবাই জয়ী হতে চায় ।
এখানে স্বার্থের কাছে ভালোবাসাও মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এখানে কর্মকে লুটপাট করে আমাকে ছুঁড়ে দেয় শূন্য ভাগাড়ে।
এখানে আমার অহংকার থাকতে নেই, তাই প্রতিনিয়ত মা চাইতে হয়।
এখানে আমি কার- কে আমার? রক্তের বন্ধন এখানে তুচ্ছ।
এখানে আমি ণিকের অতিথি তাই সূর্যাস্তের পূর্বে ফিরে যেতে হয়।
বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হয়-রক্তের বন্ধনই আমার শ্রেষ্ঠ আশ্রয়।

কালকিনি, মাদারীপুর।
17.07.2012

বুধবার, ৪ জুলাই, ২০১২

জাতীয় নাট্যোৎসবে ‘একটাই চাওয়া’

আ জ ম কামাল:
‘স্বাধীনতার ৪০ বছর ও শিল্পের আলোয় মহান মুক্তিযুদ্ধ’- স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় নাট্যোৎসবে মাদারীপুর সরকারি নাজিমুদ্দিন কলেজ ও কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে গত ৩ জুলাই রাত সাড়ে আটটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে কলেজ পর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক ‘একটাই চাওয়া’ মঞ্চস্থ হয়।
আজিজুল ইসলাম স্বপনের রচনায় আ জ ম কামালের নির্দেশনায় এতে অভিনয় করেন মাহমুদা খান লিটা, আজিজুল ইসলাাম স্বপন, সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, সাজ্জাদ হোসেন, লুবনা জাহান নিপা, আশিষ রায়, শাকিলা আক্তার, নাহিদুল ইসলাম মুকুল, সঞ্জীব তালুকদার, শান্ত কুমার, আসাদুজ্জামান রুপম, বি এ কে মামুন, মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুর জেলায় ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা ফুটে ওঠে‘ একটাই চাওয়া’ নাটকে। সোলেমান বয়াতির সংসারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যেতে থাকে নাটকের কাহিনী। সোলেমান বয়াতীর স্ত্রী আমিরনের সম্ভ্রম হারানো। পাক হানাদারের নির্যাতনে সাজুর মৃত্যু। যুদ্ধে গিয়ে শেষ অবধি রফিকের ফিরে না আসা। কিশোর বাচ্চুর যুদ্ধে অংশগ্রহণ। রাজাকার ওয়াজেদ আলী ও কেতর আলীর কুদৃষ্টি একাত্তরের পৈশাচিক দৃশ্য ফুটে উঠবে। সুফিয়া, বেনু, পান্না ও নুরুল ইসলামের আত্মত্যাগ দর্শকদের আবেগাপ্লুত করে তোলে। সবশেষে বাচ্চুর বাবা, বয়াতী, বাদল ও মানিকের কন্ঠে দৃঢ়তার সাথে উচ্চারিত হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। অভিনেতাদের সাথে সাথে দর্শকরাও গর্জে ওঠে।
নাটক শেষে নির্দেশক আ জ ম কামালের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মৃণাল কান্তি দে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব শংকর সাওজাল, ঝুনা চৌধুরী ও তৌফিক হোসেন ময়না প্রমুখ।