সোমবার, ১৪ মে, ২০১২

‘দহন’ সম্পাদকের সুনীল সাহিত্য পুরস্কার লাভ


মেহেদী হাসান :
`দহন’র ( সাহিত্যপত্র) সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ ছোটগল্পের জন্য ‘সুনীল সাহিত্য পুরস্কার-২০১১’ লাভ করায় আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি। এর আগে তিনি ২০০৬ ও ২০১০ সালেও উক্ত পুরস্কার লাভ করেন। সুনীল সাহিত্য পুরস্কার ট্রাস্ট, মাদারীপুর এ পুরস্কারের প্রবর্তণ করেন।


প্রেম নয় অমৃত

আদনীন ইভা সুমি

তিমিরাচ্ছন্ন রাতের বুক থেকে তুলে আনো স্নিগ্ধ প্রভাত,
বিকশিত প্রতিভায় যেন ফুটে ওঠে পুষ্প পারিজাত।
দেখতে চাই তোমার লেখনীর তেজদীপ্ত রশ্মি,
সেখান থেকে শুষে নেব জ্ঞানের অমৃত সুধা।
পুষ্পের মধুচোষা মধুকর নয়- জ্ঞান সাধকের মতো।

আমি কৃষ্ণ হয়েছি তোমার এক টুকরো কাব্য অমৃতের আশায়।
প্রতীক্ষার বিষাক্ত দাওয়ায় বসে আছি, প্রয়োজন নেই,
কোন প্রয়োজনের জন্য ছুটবো না কৃষ্ণ হয়ে রাধার পিছু।
কারণ দু’জনেই আজ ভিন্ন পথের পথিক।

উপমহাদেশের প্রথম মহিলা চিকিৎসক জোহরা বেগম কাজী

আফিয়া মুন :
৭ নভেম্বর উপমহাদেশের প্রথম মহিলা চিকিৎসক জোহরা বেগম কাজীর মৃত্যুবার্ষিকী। তার স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে আমাদের এই শ্রদ্ধাঞ্জলি । জীবদ্দশায় যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন নিঃস্বার্থভাবে। অধ্যাপক ডাঃ জোহরা বেগম কাজী স্ত্রীরোগ ও ধাত্রীবিদ্যায় নতুন এক ইতিহাস তৈরি করেছেন। তিনিই প্রথম ধাত্রীবিদ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করে নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসেন। নারী সমাজের উন্নত চিকিৎসার সংগ্রামে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। কুসংস্কার ও ধর্মীয় বাধা অতিক্রম করে নারী সমাজের মুক্তিদাতা হিসাবে আবির্ভূত হন।
জন্মঃ
এই মহিয়সী নারী ১৯১২ সালের ১৫ অক্টোবর ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজনানগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তাঁর পৈত্রিক নিবাস মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। পিতার নাম কাজী আব্দুস সাত্তার এবং মাতার নাম আঞ্জুমান নেছা।
শিক্ষা জীবনঃ
রাজানানগাঁওয়ে রাণী সূর্যমুখী পুত্রিমানেতে তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু।  প্রাথমিক শিক্ষা শেষে একে একে তিনি কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক ও আইএসসি পাস করেন। পরে ১৯২৯ সালে দিল্লীর লেডি হাডিং গার্লস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এটি উপমহাদেশের প্রথম মহিলা মেডিকেল কলেজ। আর এ কলেজে তিনিই প্রথম মুসলিম বাঙালি ছাত্রী। এখান থেকে ১৯৩৫ সালে এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভ করেন। তখন তাকে সম্মানজনক ভাইসরয় ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
কর্মজীবনঃ
মহাত্মা গান্ধীর পরিবারের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তখন নাগপুরে সেবাগ্রামে একটি গান্ধী আশ্রম ছিল। তিনি সেখানে অবৈতনিক চিকিৎসা সেবা দিতেন। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট দেশবিভাগের পর তিনি বড়ভাই কাজী আশরাফ মাহমুদ ও ছোটবোন শিরিন কাজীর সাথে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গাইনি বিভাগের প্রধান হিসাবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের অনারারি কর্ণেল পদে এবং হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে কনসালটেন্ট হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
পদকঃ
তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘তখমা-ই পাকিস্তান’ খেতাবে ভূষিত করেন। ২০০২ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘রোকেয়া পদক’ প্রদান করে। তিনি ‘ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল অব ঢাকা’ নামে পরিচিত ছিলেন।
শেষ কথাঃ
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩২ বছর বয়সে তৎকালীন আইনজীবি ও এমপি রাজু উদ্দিন ভূইয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আজীবন মানব সেবায় নিয়োজিত জোহরা বেগম কাজী ২০০৭ সালের ৭ নভেম্বর ঢাকার নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিবছর তাঁর জন্ম ও মৃত্যুদিনে কালকিনিসহ সারাদেশের মানুষ তাঁর স্মরণে মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করেন।

সম্পাদনা: সালাহ উদ্দিন মাহমুদ

নানামতঃ কালকিনির গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষিত হয়নি

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ :
১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারের হাটের দিন । সরগরম প্রায় দোকানপাট। সন্ধ্যার ঠিক আগে হঠ্যাৎ দু'জন অপরিচিত মানুষ ঢোল পিটিয়ে ঘোষনা করলো মুক্তিবাহিনী আসছে মিটিং করবে আপনারা কেউ বাজার ছেড়ে যাবেন না। মিনিট ১৫ না পেরোতেই হাটটি ঘেরাও করে রাজাকার, আল-বদর বাহিনী। ১০ মিনিট পরই নদীতে গানবোটে চড়ে আসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ততক্ষণে রাজাকাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর।  একদিকে হানাদারদের গুলি অপরদিকে স্থানীয় রাজাকার, আল-বদরদের নির্মম হানায় হত্যা করা হয় অন্তত দেড় শত মুক্তিকামী মানুষকে। অনেককে ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে।  লুটপাট শেষে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় হাটের দোকানপাট। যাওয়ার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ১৮ জনকে। এরমধ্যে ১০ জন আজও ফিরে আসেনি। এরপর কেটে গেছে ৪০ টি বছর। তবে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ফলে নতুন প্রজন্ম মহান এই স্মৃতিকে ভুলে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পর ২০০৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা গেট সংলগ্ন সুরভী সিনেমা হলের পাশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন। কিন্তু তারপর কেটে গেছে তিনুটি বছর। তবুও কাজ শুরু হয়নি স্মৃতিসৌধের। ঠিক তেমনিভাবে অবজ্ঞা-অবহেলায় পড়ে আছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়। অর্থাভাবে সংস্কার বা পুণঃনির্মাণ কোনটাই সম্ভব হচ্ছেনা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এসকান্দার আলী বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে চল্লিশ বছর আগে। অথচ দেশের জন্য যারা জীবন দিল, পঙ্গু হল, সর্বস্ব হারালো তাদের স্মৃতি সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিন বছর আগে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কাজ শুরু হয়নি। ফাসিয়াতলার গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও অর্থাভাবে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। এরকম হলে আগামী প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাস ভুলে যাবে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা আকন মোশাররফ হোসেনের উদ্যোগে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসেরহাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হয়। ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ চললেও স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু হয়নি। অর্থাভাবে ঢিমেতালে চলছে মিউজিয়ামের কাজ। কাজ শেষ না হওয়ায় দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এখানে সংরক্ষিত আছে শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম শিকদারসহ ২৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছবি, মুজিব নগর সরকারের গার্ড অব অনারের ছবি, নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিল ও ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত হেলমেট ও বিভিন্ন জিনিসপত্র।
মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা আকন মোশাররফ হোসেন জানান, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম এ এলাকার সন্তান। তার জন্য কিছু করতে পারিনি। কেবল একটি স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়াম করার উদ্যোগ নিয়েছি। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু করতে পারিনি। অর্থাভাবে করতে পারছিনা। মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকারী বা বেসরকারী সাহায্য পেলেই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের বিনিময়ে শত্র“মুক্ত হয়েছে এদেশ। স্বাধীনতার জন্য বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ইজ্জত হারিয়েছে মা-বোন। পঙ্গু হয়েছে অগণিত মানুষ। অথচ স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষিত হয়নি। এমনকি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিস্তম্ভ। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও সংস্কারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর মুখে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি এখন আপামর জনসাধারণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আর কালক্ষেপণ না করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে কার্যকরি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে কালকিনিবাসী।

দর্পণ থিয়েটার : একদিন জ্বলে উঠেছিল

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ :
২০০৪- ২০০৫ সালের কথা। কালকিনিতে দর্পণ থিয়েটারের নাম সবার মুখে মুখে। মাত্র তিনটি নাটক মঞ্চস্থ করতে পেরেছিল। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। মৌলবাদ, নোংড়া রাজনীতি আর প্রশাসনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হতে হয়েছিল তাদের।
কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের তৎকালীন প্রভাষক মুজিবুল হায়দারের উদ্যোগে সম্ভবত ২০০৩ সালে দর্পণ থিয়েটার প্রতিষ্ঠিত হয়। মুজিবুল হায়দারকে আহ্বায়ক করে কালকিনি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে চলতে থাকে এর কার্যক্রম। কিছুদিন পরে কবি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আবুল কালাম আজাদকে সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাজহারুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে এগিয়ে যেতে থাকে থিয়েটারের কার্যক্রম। জহিরুল আলম সিদ্দিকী ডালিম, কাজী নিয়ামুল ইসলাম ও শাহ মাহমুদ শাওনসহ এক ঝাঁক তরুণ নাট্যকর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে সমৃদ্ধ হতে থাকে দর্পণ থিয়েটার।
আবুল কালাম আজাদের রচনা ও পরিচালনায় ‘সাধু বাবার পাঠশালা’ নাটক দিয়ে মঞ্চায়ন শুরু। এরপর আবুল কালাম আজাদের রচনা ও পরিচালনায় ‘পিশাচ’ ও হেমায়েত হোসেনের রচনায় আনোয়ার হোসেনের পরিচালনায় ‘ বিয়ে পাগলা বুড়া’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।
এরপরই শুরু হতে থাকে মৌলবাদীদের নখরাঘাত। থিয়েটারটি বড় ধরণের হোচট খায়। তার সাথে যুক্ত হয় প্রশাসনের অসহযোগিতা। খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেও থমকে দাঁড়িয়েছিল দর্পণ থিয়েটার। আর এগুতে পারেনি। কালের সাক্ষী হয়ে আজীবন দাঁড়িয়ে থাকবে হয়তো।
‘প্রদীপ নিভিয়া যাইবার আগে একবার ধপ করিয়া জ্বলিয়া ওঠা’র মতোই দর্পণ থিয়েটার নিভে যাওয়ার আগে জ্বলে উঠেছিল। তাইতো একবুক ব্যথা নিয়ে থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল আলম জানান,‘ আমরা ভালোভাবেই শুরু করেছিলাম। মাত্র তিনটা শো'তেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেলাম। নাট্যকর্মীর সংখ্যা বাড়তে থাকলো। কিন্তু কোন এক স্বার্থান্বেষী মহল পিছু নিল আমাদের। মৌলবাদীরা ক্ষেপে উঠল। তকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শোয়েবুল আলম বিমাতাসুলভ আচরণ করলেন। আমরা হেরে গেলাম। আমাদের পথচলা থেমে গেল। আর এক পা ও এগুতে পারিনি।’

ভালোবাসার প্রতিস্থাপন

- মাইনুল ইসলাম

শুনেছ, সবাই কি বলে, কি বলে?
তুমি নাকি হারিয়ে গেছ গহীন অরণ্যে
আমার জীবন থেকে।
তারা জানে না,
তুমি মিশে আছো আমার শিরা- উপশিরায়,
রক্তের হিমোগ্লোবিনে
আমার কলা-টিস্যুতেও যে শুধুই তুমি।
তা কি তারা বুঝবে বল, তুমিই বল?
তাদের কথা শুনে আমি নিশ্চুপ
কি কারনে থাকি?
কেন থাকবো না?
আমার শিরা-উপশিরা, কলা-টিস্যু
তাদের কথার জবাব দেয়।
তারা যখন জবাব শুনে ক্ষিপ্ত হয়
তখন হিমোগ্লোবিন ওদের ক্ষিপ্ততাকে
সুপ্ততায় পরিণত করে।

তুমি নাকি গহীন অরণ্যে নতুন সঙ্গী নিয়ে আছ।
তারা জানে না, আমি আছি তোমার শিরা-উপশিরায়,
আমারা ভালোবেসে কলা-টিস্যু স্থাপন করেছি।
তারা জানে না,
ভালোবাসার যোজন-বিয়োজন
তারা জানে না,
ভালোবাসা মানেই যোজন
তারা জানে না,
ভালোবাসার প্রতিস্থাপন।
আমাদের প্রতিস্থাপিত ভালোবাসা থাকবে আজীবন।