সালাহ উদ্দিন মাহমুদ :
প্রথম দৃশ্য :
মঞ্চের পেছনে চিৎকার চেঁচামেচি। দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে ইভা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে। এমন সময রাজুর প্রবেশ।
রাজু : কিরে ইভা, তুই রাস্তায় দাড়ায়া কান্তাছোস ক্যান?
ইভা : বাড়ির মালিক মাইরা বাইর কইরা দিছে।
রাজু : ক্যান? কি অন্যায় করছোস?
ইভা : হাতের তোন পইরা একটা প্লেট ভাইঙ্গা গ্যাছে। আমি কী ইচ্ছা কইরা ভাঙছি?
রাজু : কস কি? তারা বুঝি তোরে খুব মারে?
ইভা : হ, ওঠতে-বইতে সব সময়ই মারে।
রাজু : কস কি? এরা কি মানুষ না? তা এহন কি করবি? কই যাবি?
ইভা : কই যামু , কি করমু কিছুই জানিনা।
রাজু : চল, তোরে আমাগো বাাড়ি নিয়া যাই। আমাগো বাড়ি তেমন কাজ-কর্ম নাই। আমার তো কোন বোন নাই। তুই খালি মার লগে থাকবি। চিন্তা করিস না, আমার লগে স্কুলে যাবি। আমার বোনের মতো থাকবি। যাবি তুই?
ইভা : কি কস, তোর বাপ-মা কি আমারে রাখবো?
রাজু: হ, রাখবো। হেদিন হুনি মায় আব্বারে কইয়- যদি একটা মাইয়া পাইতাম তয় ভালো অইতো। কাম-কাইজ করা লাগবো না। খালি আমার লগে লগে থাকলেই অইবো।
ইভা: (একটু ভেবে) হ, আমি যামু তোর লগে। খাড়া, জামা-কাপড় কয়ডা লইয়া আহি।
রাজু : ল, আমিও তোর লগে যামু। তাগো কইয়াই তোরে নিয়া যামু। ( উভয়ের প্রস্থান)
দ্বিতীয় দৃশ্য :
কারখানায় কাজ করতে করতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে অপু। দৌঁড়ে আসে জয় ও আকাশ। তুলে বসায়। পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরায়। কপালে হাত দিয়ে-
জয় : ইসরে, জ্বরে তোর গাও দি পুইরা যাইতাছে। কামে আইছোস ক্যান?
অপু : কামে না আইলে যে সবাই না খায়া থাকবো।
আকাশ : অষুধ খাইছোস?
অপু : না, টাহা আছিল না। মালিকরে কইছিলাম, কয় এহোন টাহা পাবি না। মাস গেলে একবারে দিমু। কইলাম, জ্বর আইছে। হে কয়, ইস্ ব্যাঙের আবার সর্দি।
জয়: হ, মালিকডা কেমন জানি চামার। মজুরীর টাহাই ঠিক মত দেয় না। আবার অষুধ কেনার টাহা দিব।
আকাশ: চল, তোরে গাড়িতে উডায়া দেই, বাড়ি যা গা।
অপু : না, হ্যালে একদিনের মজুরি কাইট্যা দিব। বাড়ি যামুনা। কষ্ট অইলেও কাম করতে অইবো। ঘরে একটা চাউলও নাই।
আকাশ : তাইলে এক কাম করি। আমার ধারে ২০ টাহা আছে। ( জয়কে লক্ষ করে) জয় তোর পকেটে কয় টাহা আছে?
জয় : আমার ধারে মাত্র ১০ টাহা আছে।
আকাশ: দে, আমরা টাহা দিয়া অর লেইগ্যা অষুধ কিইনা আনি। আমরা না হয় আইজ যাওয়ার সময় হাইটা যামু।
জয়: ( টাকা বের করে) নে, পারলে অপুর লেইগ্যা একটা কলা আর একটা রুটি আনিছ।ওতো দুপুরের খাওনও আনে নাই।
আকাশ : মালিক আহনের সময় অইয়া গেছে। আমি গেলাম , তুই অরে পিছনের গোডাউনে একটু শোয়ায়া মাথায় পানি দে।
অপু : না মালিক দেখলে বকাবকি করবো।
জয় : মালিক আইতে আইতে তোর জ্বর কইমা যাইবো। চল।
অপু : তয় চল। মালিক আইলে আমারে ইশারা দিস। ( উভয়ের প্রস্থান)
তৃতীয় দৃশ্য :
সাথী রাস্তায় কাগজ, বোতল ইত্যাদি কুড়ায়। এমন সময় রাজু ও ইভার প্রবেশ।
রাজু : কিরে সাথী, তুই দি এহন আর স্কুলে যাসনা । লেহা-পড়া বন্ধ করলি ক্যান?
সাথী: মোরা গরিব মানুষ। স্কুলে যামু ক্যামনে? বাপ নাই। মার অসুখ। অষুধ কেনার টাহা নাই। কাগজ-কলম কিনমু কেমনে?
ইভা : কাগজ-বোতল টোকায়া আর কত পাওয়া যায়?
সাথী : যা পাই। ল্যাহা-পড়া কি আমাগো লেইগ্যা? তুই না মাইনষের বাড়ি কাম করছ? তোরে স্কুলে যাইতে দেয়?
ইভা : তুই জানোস না, আমি এখন রাজু গো ঘরে থাকি। তারা আমারে মাইয়ার মত জানে।ভালো জায়গায় থাকি, ভালো কাপড় পড়ি, ভালো খাই, লেহা-পড়া করায়, অসুখ-বিসুখ অইলে অসুধ কিন্যা দেয়। মনে অয় নিজের বাড়ি।
সাথী : ইসসি রে, সবাই যদি এমন অইতো? তাইলে আমাগো মত অসহায় শিশুগো কোন কষ্টই থাকতো না।
রাজু : আচ্ছা, তুই কি জানোস না, ওয়ার্ল্ড ভিশন অসহায় শিশুগো সাহায্য করে?
সাথী : না, মুই তো এর আগে হুনি নাই।
ইভা: হ, বই-খাতা থেইকা শুরু কইরা অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়।
সাথী : আমারে দিবো নি?
রাজু : দিবো না ক্যান? অবশ্যই দিবো। চল তোরে ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু ফোরামের সদস্য বানায়া দেই।
ইভা: হ চল, বাড়ি যাওয়ার আগে তোরে অপিসে নিয়া যামু।
সাথী : কোন অপিসে?
রাজু : আমাগো শিশু ফোরামের অপিসে। যেইডা আমাগো ভরসা। অসহায়, অবহেলিত, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের একমাত্র আশ্রয়।
সাথী : হ, আমারও তো মানুষ। আমরাও বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। আমরাও আমাগো অধিকার চাই।
ইভা : চল তাইলে। ( উভয়ের প্রস্থান)। পেছনে ‘আমরা করব জয়.....’ গানটি বেজে উঠবে। সবাই ফ্রিজ।
প্রথম দৃশ্য :
মঞ্চের পেছনে চিৎকার চেঁচামেচি। দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে ইভা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে। এমন সময রাজুর প্রবেশ।
রাজু : কিরে ইভা, তুই রাস্তায় দাড়ায়া কান্তাছোস ক্যান?
ইভা : বাড়ির মালিক মাইরা বাইর কইরা দিছে।
রাজু : ক্যান? কি অন্যায় করছোস?
ইভা : হাতের তোন পইরা একটা প্লেট ভাইঙ্গা গ্যাছে। আমি কী ইচ্ছা কইরা ভাঙছি?
রাজু : কস কি? তারা বুঝি তোরে খুব মারে?
ইভা : হ, ওঠতে-বইতে সব সময়ই মারে।
রাজু : কস কি? এরা কি মানুষ না? তা এহন কি করবি? কই যাবি?
ইভা : কই যামু , কি করমু কিছুই জানিনা।
রাজু : চল, তোরে আমাগো বাাড়ি নিয়া যাই। আমাগো বাড়ি তেমন কাজ-কর্ম নাই। আমার তো কোন বোন নাই। তুই খালি মার লগে থাকবি। চিন্তা করিস না, আমার লগে স্কুলে যাবি। আমার বোনের মতো থাকবি। যাবি তুই?
ইভা : কি কস, তোর বাপ-মা কি আমারে রাখবো?
রাজু: হ, রাখবো। হেদিন হুনি মায় আব্বারে কইয়- যদি একটা মাইয়া পাইতাম তয় ভালো অইতো। কাম-কাইজ করা লাগবো না। খালি আমার লগে লগে থাকলেই অইবো।
ইভা: (একটু ভেবে) হ, আমি যামু তোর লগে। খাড়া, জামা-কাপড় কয়ডা লইয়া আহি।
রাজু : ল, আমিও তোর লগে যামু। তাগো কইয়াই তোরে নিয়া যামু। ( উভয়ের প্রস্থান)
দ্বিতীয় দৃশ্য :
কারখানায় কাজ করতে করতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে অপু। দৌঁড়ে আসে জয় ও আকাশ। তুলে বসায়। পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরায়। কপালে হাত দিয়ে-
জয় : ইসরে, জ্বরে তোর গাও দি পুইরা যাইতাছে। কামে আইছোস ক্যান?
অপু : কামে না আইলে যে সবাই না খায়া থাকবো।
আকাশ : অষুধ খাইছোস?
অপু : না, টাহা আছিল না। মালিকরে কইছিলাম, কয় এহোন টাহা পাবি না। মাস গেলে একবারে দিমু। কইলাম, জ্বর আইছে। হে কয়, ইস্ ব্যাঙের আবার সর্দি।
জয়: হ, মালিকডা কেমন জানি চামার। মজুরীর টাহাই ঠিক মত দেয় না। আবার অষুধ কেনার টাহা দিব।
আকাশ: চল, তোরে গাড়িতে উডায়া দেই, বাড়ি যা গা।
অপু : না, হ্যালে একদিনের মজুরি কাইট্যা দিব। বাড়ি যামুনা। কষ্ট অইলেও কাম করতে অইবো। ঘরে একটা চাউলও নাই।
আকাশ : তাইলে এক কাম করি। আমার ধারে ২০ টাহা আছে। ( জয়কে লক্ষ করে) জয় তোর পকেটে কয় টাহা আছে?
জয় : আমার ধারে মাত্র ১০ টাহা আছে।
আকাশ: দে, আমরা টাহা দিয়া অর লেইগ্যা অষুধ কিইনা আনি। আমরা না হয় আইজ যাওয়ার সময় হাইটা যামু।
জয়: ( টাকা বের করে) নে, পারলে অপুর লেইগ্যা একটা কলা আর একটা রুটি আনিছ।ওতো দুপুরের খাওনও আনে নাই।
আকাশ : মালিক আহনের সময় অইয়া গেছে। আমি গেলাম , তুই অরে পিছনের গোডাউনে একটু শোয়ায়া মাথায় পানি দে।
অপু : না মালিক দেখলে বকাবকি করবো।
জয় : মালিক আইতে আইতে তোর জ্বর কইমা যাইবো। চল।
অপু : তয় চল। মালিক আইলে আমারে ইশারা দিস। ( উভয়ের প্রস্থান)
তৃতীয় দৃশ্য :
সাথী রাস্তায় কাগজ, বোতল ইত্যাদি কুড়ায়। এমন সময় রাজু ও ইভার প্রবেশ।
রাজু : কিরে সাথী, তুই দি এহন আর স্কুলে যাসনা । লেহা-পড়া বন্ধ করলি ক্যান?
সাথী: মোরা গরিব মানুষ। স্কুলে যামু ক্যামনে? বাপ নাই। মার অসুখ। অষুধ কেনার টাহা নাই। কাগজ-কলম কিনমু কেমনে?
ইভা : কাগজ-বোতল টোকায়া আর কত পাওয়া যায়?
সাথী : যা পাই। ল্যাহা-পড়া কি আমাগো লেইগ্যা? তুই না মাইনষের বাড়ি কাম করছ? তোরে স্কুলে যাইতে দেয়?
ইভা : তুই জানোস না, আমি এখন রাজু গো ঘরে থাকি। তারা আমারে মাইয়ার মত জানে।ভালো জায়গায় থাকি, ভালো কাপড় পড়ি, ভালো খাই, লেহা-পড়া করায়, অসুখ-বিসুখ অইলে অসুধ কিন্যা দেয়। মনে অয় নিজের বাড়ি।
সাথী : ইসসি রে, সবাই যদি এমন অইতো? তাইলে আমাগো মত অসহায় শিশুগো কোন কষ্টই থাকতো না।
রাজু : আচ্ছা, তুই কি জানোস না, ওয়ার্ল্ড ভিশন অসহায় শিশুগো সাহায্য করে?
সাথী : না, মুই তো এর আগে হুনি নাই।
ইভা: হ, বই-খাতা থেইকা শুরু কইরা অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়।
সাথী : আমারে দিবো নি?
রাজু : দিবো না ক্যান? অবশ্যই দিবো। চল তোরে ওয়ার্ল্ড ভিশনের শিশু ফোরামের সদস্য বানায়া দেই।
ইভা: হ চল, বাড়ি যাওয়ার আগে তোরে অপিসে নিয়া যামু।
সাথী : কোন অপিসে?
রাজু : আমাগো শিশু ফোরামের অপিসে। যেইডা আমাগো ভরসা। অসহায়, অবহেলিত, অধিকার বঞ্চিত শিশুদের একমাত্র আশ্রয়।
সাথী : হ, আমারও তো মানুষ। আমরাও বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। আমরাও আমাগো অধিকার চাই।
ইভা : চল তাইলে। ( উভয়ের প্রস্থান)। পেছনে ‘আমরা করব জয়.....’ গানটি বেজে উঠবে। সবাই ফ্রিজ।