রবিবার, ২৬ মে, ২০১৩

ক্যাম্পাসের প্রিয় মুখ: শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকেই লালন করতে চান আজীবন

খায়রুল আলম:
সারাদিন কাজ নিয়ে পড়ে থাকেন। নাওয়া-খাওয়া ভুলে যান। কাজটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্বস্তি নেই। পড়াশুনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা, সাহিত্য চর্চা, নাটক ও আবৃত্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন সারাক্ষণ। লিখতে বসলে ভোর হয়ে যায়। ঘুমঘুম চোখে দিনের সব কাজ সারেন। কাজ পাগল এই মানুষটির নাম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। অনেকের কাছে এস. মাহমুদ নামে পরিচিত। কেউ কেউ ডাকেন সালু বলে।
সংবাদ সংগ্রহ, নাটক লেখা, অভিনয় করা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি থেকে শুরু করে সবখানেই তার বিচরণ। বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা, উপ-সম্পাদকীয় ও ছোটগল্প লিখেও বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সবার পরিচিত জন। পড়ালেখা করছেন বাংলা সাহিত্যে। কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ থেকে এবছর মাস্টার্সে(বাংলা) প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাই কলেজের বাংলা বিভাগ তাকে কৃতি শিক্ষার্থী হিসাবে সংবর্ধনা দিয়েছে।
সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। বাবা জেড এম এ মাজেদ মাদ্রাসা শিক্ষক ও মা হাসনে আরা গৃহিনী বলে সঙ্গত কারণেই পড়তে হয় মাদ্রাসায়। মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করে নিজ উদ্যোগে ভর্তি হন বাংলা সাহিত্যে অনার্স করার জন্য। কলেজে এসে যুক্ত হন প্রথম আলো বন্ধুসভার সাথে। দৈনিক দেশবাংলার মাধ্যমে শুরু করেন সাংবাদিকতা। জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অভিনয় ও আবৃত্তিতে অংশ নিয়ে বরাবরই প্রথম হতে থাকেন। ছোটগল্প প্রতিযোগিতায় ২০০৬, ২০১০ ও ২০১১ সালে ‘সুনীল সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্পাদনা করেন সাহিত্য পত্রিকা ‘আলোর পথে’ ও ‘দহন’। ২০০৭ সালে ‘প্রথমা রঙ্গমঞ্চ’ নামে একটা নাটকের গ্র“প প্রতিষ্ঠা করেন। এ পর্যন্ত এক ডজনের বেশি নাটক রচনা ও মঞ্চস্থ করেছেন। ২০১১ সালে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের ‘পথনাটক নির্মাণ কর্মশালা’য় অংশগ্রহণ করেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় নাট্যোৎসবে ‘একটাই চাওয়া’ নাটকে এবং ২০১৩ সালের মে মাসে ‘স্বপ্ন ও দ্রোহের জাতীয় নাট্যোৎসবে’ কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের পরিবেশনায় নিজের লেখা ‘বৈচাপাগল’ নাটকে অভিনয় করেন। বর্তমানে অক্ষর আবৃত্তি একাডেমীর প্রশিক্ষক, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কালকিনি শাখা সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও কালকিনি শিল্পকলা একাডেমীর কার্যনির্বাহী সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের অনুপ্রেরণা আর উৎসাহে এগিয়ে চলছেন তিনি। ধ্যানে-জ্ঞানে, চিন্তা-চেতনায় শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকেই লালন করতে চান আজীবন।