সালাহ উদ্দিন মাহমুদ :
১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারের হাটের দিন । সরগরম প্রায় দোকানপাট। সন্ধ্যার ঠিক আগে হঠ্যাৎ দু'জন অপরিচিত মানুষ ঢোল পিটিয়ে ঘোষনা করলো মুক্তিবাহিনী আসছে মিটিং করবে আপনারা কেউ বাজার ছেড়ে যাবেন না। মিনিট ১৫ না পেরোতেই হাটটি ঘেরাও করে রাজাকার, আল-বদর বাহিনী। ১০ মিনিট পরই নদীতে গানবোটে চড়ে আসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ততক্ষণে রাজাকাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর। একদিকে হানাদারদের গুলি অপরদিকে স্থানীয় রাজাকার, আল-বদরদের নির্মম হানায় হত্যা করা হয় অন্তত দেড় শত মুক্তিকামী মানুষকে। অনেককে ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে। লুটপাট শেষে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় হাটের দোকানপাট। যাওয়ার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ১৮ জনকে। এরমধ্যে ১০ জন আজও ফিরে আসেনি। এরপর কেটে গেছে ৪০ টি বছর। তবে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ফলে নতুন প্রজন্ম মহান এই স্মৃতিকে ভুলে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পর ২০০৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা গেট সংলগ্ন সুরভী সিনেমা হলের পাশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন। কিন্তু তারপর কেটে গেছে তিনুটি বছর। তবুও কাজ শুরু হয়নি স্মৃতিসৌধের। ঠিক তেমনিভাবে অবজ্ঞা-অবহেলায় পড়ে আছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়। অর্থাভাবে সংস্কার বা পুণঃনির্মাণ কোনটাই সম্ভব হচ্ছেনা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এসকান্দার আলী বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে চল্লিশ বছর আগে। অথচ দেশের জন্য যারা জীবন দিল, পঙ্গু হল, সর্বস্ব হারালো তাদের স্মৃতি সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিন বছর আগে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কাজ শুরু হয়নি। ফাসিয়াতলার গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও অর্থাভাবে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। এরকম হলে আগামী প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাস ভুলে যাবে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা আকন মোশাররফ হোসেনের উদ্যোগে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসেরহাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হয়। ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ চললেও স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু হয়নি। অর্থাভাবে ঢিমেতালে চলছে মিউজিয়ামের কাজ। কাজ শেষ না হওয়ায় দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এখানে সংরক্ষিত আছে শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম শিকদারসহ ২৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছবি, মুজিব নগর সরকারের গার্ড অব অনারের ছবি, নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিল ও ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত হেলমেট ও বিভিন্ন জিনিসপত্র।
মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা আকন মোশাররফ হোসেন জানান, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম এ এলাকার সন্তান। তার জন্য কিছু করতে পারিনি। কেবল একটি স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়াম করার উদ্যোগ নিয়েছি। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু করতে পারিনি। অর্থাভাবে করতে পারছিনা। মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকারী বা বেসরকারী সাহায্য পেলেই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের বিনিময়ে শত্র“মুক্ত হয়েছে এদেশ। স্বাধীনতার জন্য বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ইজ্জত হারিয়েছে মা-বোন। পঙ্গু হয়েছে অগণিত মানুষ। অথচ স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষিত হয়নি। এমনকি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিস্তম্ভ। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও সংস্কারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর মুখে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি এখন আপামর জনসাধারণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আর কালক্ষেপণ না করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে কার্যকরি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে কালকিনিবাসী।
১৯৭১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারের হাটের দিন । সরগরম প্রায় দোকানপাট। সন্ধ্যার ঠিক আগে হঠ্যাৎ দু'জন অপরিচিত মানুষ ঢোল পিটিয়ে ঘোষনা করলো মুক্তিবাহিনী আসছে মিটিং করবে আপনারা কেউ বাজার ছেড়ে যাবেন না। মিনিট ১৫ না পেরোতেই হাটটি ঘেরাও করে রাজাকার, আল-বদর বাহিনী। ১০ মিনিট পরই নদীতে গানবোটে চড়ে আসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। ততক্ষণে রাজাকাররা ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিকামী মানুষের ওপর। একদিকে হানাদারদের গুলি অপরদিকে স্থানীয় রাজাকার, আল-বদরদের নির্মম হানায় হত্যা করা হয় অন্তত দেড় শত মুক্তিকামী মানুষকে। অনেককে ভাসিয়ে দেয়া হয় নদীতে। লুটপাট শেষে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় হাটের দোকানপাট। যাওয়ার সময় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ১৮ জনকে। এরমধ্যে ১০ জন আজও ফিরে আসেনি। এরপর কেটে গেছে ৪০ টি বছর। তবে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। ফলে নতুন প্রজন্ম মহান এই স্মৃতিকে ভুলে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পর ২০০৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা গেট সংলগ্ন সুরভী সিনেমা হলের পাশে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন। কিন্তু তারপর কেটে গেছে তিনুটি বছর। তবুও কাজ শুরু হয়নি স্মৃতিসৌধের। ঠিক তেমনিভাবে অবজ্ঞা-অবহেলায় পড়ে আছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়। অর্থাভাবে সংস্কার বা পুণঃনির্মাণ কোনটাই সম্ভব হচ্ছেনা।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এসকান্দার আলী বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে চল্লিশ বছর আগে। অথচ দেশের জন্য যারা জীবন দিল, পঙ্গু হল, সর্বস্ব হারালো তাদের স্মৃতি সংরক্ষণের কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিন বছর আগে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেও কাজ শুরু হয়নি। ফাসিয়াতলার গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও অর্থাভাবে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। এরকম হলে আগামী প্রজন্ম স্বাধীনতার ইতিহাস ভুলে যাবে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা আকন মোশাররফ হোসেনের উদ্যোগে বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসেরহাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হয়। ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়ামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ চললেও স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু হয়নি। অর্থাভাবে ঢিমেতালে চলছে মিউজিয়ামের কাজ। কাজ শেষ না হওয়ায় দর্শণার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এখানে সংরক্ষিত আছে শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম শিকদারসহ ২৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছবি, মুজিব নগর সরকারের গার্ড অব অনারের ছবি, নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিল ও ছবি, মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত হেলমেট ও বিভিন্ন জিনিসপত্র।
মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা আকন মোশাররফ হোসেন জানান, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। শহীদ বীর বিক্রম নুরুল ইসলাম এ এলাকার সন্তান। তার জন্য কিছু করতে পারিনি। কেবল একটি স্মৃতিসৌধ ও মিউজিয়াম করার উদ্যোগ নিয়েছি। মিউজিয়ামের সংস্কার কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু করতে পারিনি। অর্থাভাবে করতে পারছিনা। মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছিলেন। সরকারী বা বেসরকারী সাহায্য পেলেই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব।
দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের বিনিময়ে শত্র“মুক্ত হয়েছে এদেশ। স্বাধীনতার জন্য বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ইজ্জত হারিয়েছে মা-বোন। পঙ্গু হয়েছে অগণিত মানুষ। অথচ স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ফাসিয়াতলা গণহত্যার স্মৃতি সংরক্ষিত হয়নি। এমনকি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতিস্তম্ভ। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়টিও সংস্কারের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীর মুখে উপজেলার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের খাসের হাট বন্দরে মুক্তিযোদ্ধা মিউজিয়াম স্থাপিত হলেও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণের দাবি এখন আপামর জনসাধারণের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। আর কালক্ষেপণ না করে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি সংরক্ষণে কার্যকরি পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে কালকিনিবাসী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন