বুধবার, ১৩ জুন, ২০১২

নারীর প্রতি কেন এত সহিংসতা

সালাহ উদ্দিন মাহমুদঃ
‘বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর,/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ কথা আমরা কখনোই অস্বীকার করতে পারি না। কিন্তু কাজের বেলায় তার উল্টো। আমরা মুখে এ কথা বললেও তা অন্তরে লালন করি না। এ আমাদের মত পুরুষের দীনতা। আমাদের পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থা এ জন্য বহুলাংশে দায়ি। আমরা কেবল নারীকে আমাদের ভোগের সামগ্রী হিসাবে পেতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করি।
আমাদের সমাজের নারী কারো মা কারো সন্তান কারো বোন কারো স্ত্রী। কিন্তু সে আমরাই আমাদেও লোলুপ দৃষ্টির কারণে তাদের আলাদা করে দেখি। পরিবর্তিত হয়ে যায় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি। পুরুষমাত্রই এখন নারীর কাছে আজরাইল। আমাদের সমাজ এখন নারীর কাছে অনেকটা অভিশাপের মতন।
কবি বলেছেন-‘নারীর বিরহে, নারীর মিলনে, নর পেল কবি প্রাণ,/ যত কথা তার হইল কবিতা, শব্দ হইল গান।’ অথচ আমরা যখন বিরহে কাতর হই; তখন নারীর বুকে মাথা রেখে একটু উষ্ণতা খুঁজি। কামাতুর হয়ে নারীকে ভোগ করি। শেষে নিক্ষেপ করি আস্তাকুড়ে। মিলনে ব্যর্থ হলে ঝলসে দেই নারীর শরীর। উন্মত্ততায় খুন করতেও দ্বিধাবোধ করি না। প্রেমের ফাঁদে ফেলে লালসা মিটিয়ে ছাব্বিশ টুকরো করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেই নারীর শরীর।
তাইতো মেয়ে যত বড় হয় পরিবারের দুঃশ্চিন্তা ততই বাড়ে। ফলে তার স্বাভাবিক বিকাশ তখন বাধাগ্রস্ত হয়। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই নারীর প্রতি সহিংসতার নানাবিধ সংবাদ চোখে পড়ে। কারো চোখে জল, কারো মুখে বীভৎস হাসি।
ইভটিজিং, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, হত্যা ও নারী নির্যাতন এখন সমাজের জন্য বিভীষিকা হয়ে দেখা দিয়েছে। এর থেকে মুক্তি পেতে আমাদের কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নৈতিক শিক্ষা ও মানবিক আচরণগত ধারণাই এর সমাধান হতে পারে। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন