সালাহ উদ্দিন মাহমুদ:
‘হোগলা’ গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এ শিল্পের কারিগর নারীরা। গ্রামের নারীরাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে। পারিবারিক বিভিন্ন কাজে হোগলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রামে হোগলার ব্যবহার লক্ষণীয়। ঘরের বিছানা, খাদ্যশস্য রোদে শুকানো, মিলাদ-মাহফিল, পূজা-পার্বণে অনেক মানুষকে বসতে দেওয়ার ক্ষেত্রেও হোগলা ব্যবহৃত হয়। আর এতে সাবলম্বী হচ্ছে নারীরা। পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বাড়তি উপার্জন করে সচ্ছলতা সাবলম্বী হয়েছে। পরিবারে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা।
হোগলা পাতা সংগ্রহ:
নদীর পাড়ে বা চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হোগলা কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাসের মধ্যে কেটে শুকিয়ে বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিয়ে আসা হয়। পরিবারের পুরুষরা বাজার থেকে হোগলা পাতা কিনে নিয়ে যান। বাকি কাজ করতে হয় নারীদের। এক মুঠি হোগলা পাতা ৫০-১০০ টাকায় কিনতে হয়। এক মুঠিতে ২টা হোগলা হয়। প্রতিটি হোগলা পাইকারি ৬০-১২০ টাকা বিক্রি করা যায়।
যেভাবে তৈরি হয়:
হাট-বাজার থেকে কিনে আনা শুকনো হোগলা পাতা দেখতে ত্রিকোণাকৃতির। মাদুর তৈরির জন্য প্রথমে শুকনো পাতাগুলো ‘কেচতে’ হয়। অর্থাৎ ত্রিকোণাকার পাতার এক পিঠে তিন-চার ইঞ্চি মাপের একটি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফাঁড়ার জন্য দাগ দিতে হয়। এরপর পাতা চ্যাপ্টা করে শুরু হয় মাদুর বোনার কাজ। বুনন শেষে ‘মুড়ি ভাঙা’ দিয়ে কাজ শেষ করতে হয়। দক্ষ হাতে ১০ বাই ১২ ফুট বড় একটি হোগলা পাতার মাদুর তৈরি করতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। বারো মাসই হোগলা তৈরি করা যায়।
বিক্রি হয় যেভাবে:
হোগলা পাতার মাদুর বিক্রি হয় হাট-বাজারে। ব্যবসায়িরা পাইকারি দরে হোগলা কিনে বরিশাল, স্বরূপকাঠি, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় ট্রলার বা লঞ্চ যোগে পাঠিয়ে দেন। মাদুর প্রতি তাদের দুই-তিন টাকা লাভ হয়। প্রতিটি চালানে কয়েক হাজার মাদুর পাঠাতে পারেন।
হোগলার জন্য প্রসিদ্ধ:
হোগলার জন্য প্রসিদ্ধ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পৌর এলাকার তিনটি গ্রাম পাতাবালী, জুরগাও ও নয়াকান্দি; সিডিখান ও নবগ্রাম ইউনিয়নের ১০টি, এনায়েতনগর ইউনিয়নের ফাঁসিয়াতলা ও বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে হোগলা তৈরি হয়। তবে সবচেয়ে বেশি মাদুর কেনাবেচা হয় জুরগাঁও হাটে। রোববার ও বুধবার সপ্তাহে দুই দিন বসে হাট। পাতা সংগ্রহ ও হোগলা বিক্রি করা জয় ঐদিন।
হোগলা শিল্পীদের কথা:
হোগলা শিল্পী মালতী মন্ডল ও সুমিত্রা সরকার জানান, ঘরে বসে থেকে কি করবো? হোগলা বুনে ভালো আয় হয়। সংসারও ভালো চলে। শুধু কী পুরুষের আয় দিয়েই সংসার চলে? তাই আমাদের গ্রামের নারীরা বাড়িতে বসে হোগলা বুনে বাড়তি আয় করে। তাতে সংসারের অভাব দূর হয়। তবে যত বেশি চালান খাটানো যায়; তত বেশি লাভ হয়। ব্যবসাটা ভালোই। পরিশ্রমও কম। সংসারের অন্যান্য কাজের ফাঁকে আমরা হোগলা বুনি।
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, কালকিনি
০৫.০১.২০১৩
০১৭২৫৪৩০৭৬৩
‘হোগলা’ গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এ শিল্পের কারিগর নারীরা। গ্রামের নারীরাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে। পারিবারিক বিভিন্ন কাজে হোগলা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রামে হোগলার ব্যবহার লক্ষণীয়। ঘরের বিছানা, খাদ্যশস্য রোদে শুকানো, মিলাদ-মাহফিল, পূজা-পার্বণে অনেক মানুষকে বসতে দেওয়ার ক্ষেত্রেও হোগলা ব্যবহৃত হয়। আর এতে সাবলম্বী হচ্ছে নারীরা। পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বাড়তি উপার্জন করে সচ্ছলতা সাবলম্বী হয়েছে। পরিবারে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা।
হোগলা পাতা সংগ্রহ:
নদীর পাড়ে বা চরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হোগলা কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাসের মধ্যে কেটে শুকিয়ে বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিয়ে আসা হয়। পরিবারের পুরুষরা বাজার থেকে হোগলা পাতা কিনে নিয়ে যান। বাকি কাজ করতে হয় নারীদের। এক মুঠি হোগলা পাতা ৫০-১০০ টাকায় কিনতে হয়। এক মুঠিতে ২টা হোগলা হয়। প্রতিটি হোগলা পাইকারি ৬০-১২০ টাকা বিক্রি করা যায়।
যেভাবে তৈরি হয়:
হাট-বাজার থেকে কিনে আনা শুকনো হোগলা পাতা দেখতে ত্রিকোণাকৃতির। মাদুর তৈরির জন্য প্রথমে শুকনো পাতাগুলো ‘কেচতে’ হয়। অর্থাৎ ত্রিকোণাকার পাতার এক পিঠে তিন-চার ইঞ্চি মাপের একটি বাঁশের কঞ্চি দিয়ে ফাঁড়ার জন্য দাগ দিতে হয়। এরপর পাতা চ্যাপ্টা করে শুরু হয় মাদুর বোনার কাজ। বুনন শেষে ‘মুড়ি ভাঙা’ দিয়ে কাজ শেষ করতে হয়। দক্ষ হাতে ১০ বাই ১২ ফুট বড় একটি হোগলা পাতার মাদুর তৈরি করতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। বারো মাসই হোগলা তৈরি করা যায়।
বিক্রি হয় যেভাবে:
হোগলা পাতার মাদুর বিক্রি হয় হাট-বাজারে। ব্যবসায়িরা পাইকারি দরে হোগলা কিনে বরিশাল, স্বরূপকাঠি, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় ট্রলার বা লঞ্চ যোগে পাঠিয়ে দেন। মাদুর প্রতি তাদের দুই-তিন টাকা লাভ হয়। প্রতিটি চালানে কয়েক হাজার মাদুর পাঠাতে পারেন।
হোগলার জন্য প্রসিদ্ধ:
হোগলার জন্য প্রসিদ্ধ মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পৌর এলাকার তিনটি গ্রাম পাতাবালী, জুরগাও ও নয়াকান্দি; সিডিখান ও নবগ্রাম ইউনিয়নের ১০টি, এনায়েতনগর ইউনিয়নের ফাঁসিয়াতলা ও বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামে হোগলা তৈরি হয়। তবে সবচেয়ে বেশি মাদুর কেনাবেচা হয় জুরগাঁও হাটে। রোববার ও বুধবার সপ্তাহে দুই দিন বসে হাট। পাতা সংগ্রহ ও হোগলা বিক্রি করা জয় ঐদিন।
হোগলা শিল্পীদের কথা:
হোগলা শিল্পী মালতী মন্ডল ও সুমিত্রা সরকার জানান, ঘরে বসে থেকে কি করবো? হোগলা বুনে ভালো আয় হয়। সংসারও ভালো চলে। শুধু কী পুরুষের আয় দিয়েই সংসার চলে? তাই আমাদের গ্রামের নারীরা বাড়িতে বসে হোগলা বুনে বাড়তি আয় করে। তাতে সংসারের অভাব দূর হয়। তবে যত বেশি চালান খাটানো যায়; তত বেশি লাভ হয়। ব্যবসাটা ভালোই। পরিশ্রমও কম। সংসারের অন্যান্য কাজের ফাঁকে আমরা হোগলা বুনি।
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, কালকিনি
০৫.০১.২০১৩
০১৭২৫৪৩০৭৬৩
it is a work for poor women in village .But also some male are help them-self. জুরগাঁও হাটে it is also two ,One is kalkini another is gushairhat.
উত্তরমুছুন