শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৩

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ এর দু’টি কবিতা

## ঝড়কে আমি করিনা ভয়-

ঝড়কে আমি করিনা ভয়-
কী আছে আমার?
কিইবা ধ্বংস হবে?

ভয় নেই কিছু ধ্বসে পড়ার
ভয় নেই কিছু উড়ে যাবার

বিরাণ পৃথিবী আমার,
বিরাণ বাড়ি-ঘর।
কাঁপাতে পারে না মন
কোন বৈশাখী ঝড়।

## আমি আজ আর প্রেমের কবিতা লিখিনা

আমি আজ আর প্রেমের কবিতা লিখিনা।
বিদ্রোহ গর্জে উঠেছে মনে,
অন্তরে অতৃপ্তি নিয়ে ভালোবাসা যায় কি কিছু?

ক্ষিপ্ততার অগ্নুৎপাতে ছাড়খাড় হয়ে গেছে প্রেম
জাগতিক স্বার্থপরতা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে মানবতা।
যেখানে এখনো ‘মানুষ মানুষের জন্য’
হতে পারেনি আলোর দিশারী
অন্ধকারে হাতড়ে চলে আমার প্রিয় স্বদেশ
স্বার্থান্বেষী ধর্মান্ধতা আর পোয়াবারো রাজনীতি
ঝরায় প্রতিনিয়ত রক্তধারা।

সেখানে প্রেমের কবিতা চুলায় যাকÑ
প্রেমিকারা সব মুখ লুকাক আড়ালে
এবার হবে দ্রোহের গান,
জেগে উঠুক ভয়হীন মৃত্যুহীন প্রাণ।

অস্ত্রের মতো শাণিত হোক সোনার দোয়াত
ক্লিক ক্লিক শব্দে জন্ম হোক ফটোগ্রাফÑ
যেখানে নেই কোন প্রেমিকার মুখ
যেখানে নেই যুগলবন্দী স্মৃতির আঁচড়।

কবিতার মঞ্চে এখন প্রিয়তমার স্তুতি ভালো লাগেনা
ফ্যাকাশে হয়ে আসে সকল আবেগ,
গর্জে ওঠে ফুসে ওঠে আর্ত শব্দাবলীÑ
কন্ঠে উচ্চারিত হয় দ্রোহের ভাষণ,
‘অজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই’ কিংবা
‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা...’
হয়ে ওঠে আরাধনার প্রথম পাঠ।

বি:দ্র: বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাদারীপুরে অনুষ্ঠিত আবৃত্তি উৎসব থেকে  ফিরে।

আর পারছি না

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ

আর পারছি না- দৃশ্যগুলো দেখার মত না।
সারি সারি মৃতদেহ দেখেÑ চোখ জ্বালা করে ওঠে।

আর কত লাশের মিছিল। এ দেশ কী মৃত্যু উপত্যাকা?
মানতে পারি না- তবুও মানতে হয়।
কাঁদতে পারি না- তবুও কাঁদতে হয়।
মুখে ভাষা নেই- নির্বাক তাকিয়ে রই।

এ কেমন ট্র্যাজেডি জাতির ঘারে?
এ বোঝা হালকা হবার নয়।
এ কেমন বেঁচে থাকার প্রত্যয়?
কাফনের শিয়রে দাঁড়িয়ে এ কেমন স্বান্তনা?
আর পারছি না- আর পারছি না- আর পারছি না।

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
কালকিনি, মাদারীপুর
২৬ এপ্রিল ২০১৩

শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৩

কালকিনিতে জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরামের বর্ষবরণ


সালাহ উদ্দিন মাহমুদ:
‘আইলো আইলো আইলোরে, রঙ্গে ভরা বৈশাখ আমার আইলোরে’- স্লোগানকে সামনে রেখে শুভ নববর্ষ ১৪২০ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম কালকিনির উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বর্ণাঢ্য আয়োজনে শোভাযাত্রা, বাঙলার চিরায়ত ঐতিহ্য পান্তা-ইলিশ ভোজন, আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রেসক্লাব চত্বর থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
যায়যায়দিনের কালকিনি প্রতিনিধি মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে জাহিদ হাসানের সঞ্চালনে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলে আজিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রায়, কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের সমাজ কর্ম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, কবি ও কথাসাহিত্যিক আকন মোশাররফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা সরদার লোকমান হোসেন ও মসিউর রহমান সবুজ। বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান, খায়রুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামীম হোসাইন। সাংস্কৃতিক পর্বে আবৃত্তি করেন জাহিন, জাবির, মীম, রাইসা, ফারিহা ও সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। সংগীত পরিবেশন করে মানসী. আসমাউল ইসলাম, রাফিয়া, শফিউল, সিফাত, ফাহিম ও মুহিত। নৃত্য পরিবেশন করে রাফিয়া ও সায়মা। সবশেষে শিল্পীদের মাঝে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ,
যুগ্ম আহ্বায়ক, ফ্রেন্ডস ফোরাম
কালকিনি।
০১৭২৫৪৩০৭৬৩


কালকিনিতে ‘বৈচাপাগল’ মঞ্চস্থ

অপর্ণা দাস :
‘দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথে মেল বন্ধন’- শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মাদারীপুরের ব্যবস্থাপনায় কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের পরিবেশনায় সালাহ উদ্দিন মাহমুদ এর রচনায় আ জ ম কামালের নির্দেশনায় স্বপ্ন ও দ্রোহের নাটক কেন্দ্রীক প্রযোজনা ‘বৈচাপাগল’ মঞ্চস্থ হয়।
গত ১৬ এপ্রিল সোমবার রাত ৯ টায় কালকিনি উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বৈশাখী মেলা মঞ্চে নাটকে অভিনয় করেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, বি এ কে মামুন, নাহিদুল ইসলাম মুকুল, শান্ত কুমার, সঞ্জীব তালুকদার, সাইফুল ইসলাম, আহসান হাবীব, পলাশ হোসেন, মাহমুদা খানম, ঝুমা আক্তার, শাকিলা আক্তার, অপর্ণা দাস, নিপা, রোমানা, সজল নন্দী ও সাকিব মাহমুদ।

বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৩

মাদারীপুরে স্বপ্ন ও দ্রোহের নাটক ‘বৈচাপাগল’ মঞ্চস্থ

মারজিয়া নিশি:
‘দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সাথে মেল বন্ধন’- শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মাদারীপুরের ব্যবস্থাপনায় কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের পরিবেশনায় সালাহ উদ্দিন মাহমুদ এর রচনায় আ জ ম কামালের নির্দেশনায় স্বপ্ন ও দ্রোহের নাটক কেন্দ্রীক প্রযোজনা ‘বৈচাপাগল’ গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় মাদারীপুর মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয়।

শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৩

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ-এর কবিতা

# উত্তরাধিকার

এ কেমন আচানক বিষণœ দুপুর, পাখির ডানার ভাঁজে ভাঁজে উড়ন্ত মেঘ।
আলো আঁধারির লুকোচুরি, ফিকে হয়ে আসে দিগন্তের হাসি।
কুয়াশার আড়ালে উঁকি মারেÑ প্রিয়তমার ফ্যাকাশে মুখ।
এ কেমন কর্মহীন অলস দুপুর, রমনীর শরীরের ভাঁজে ভাঁজে সুখ।
শৃংগারে শিৎকারে কাতরতা, ভাবি প্রজন্মের প্রত্যাশিত আলো।
সঙ্গমের আড়ালে উঁকি মারেÑ আগামীর সুযোগ্য উত্তরাধিকার।

# তোমার স্বপ্ন ঘুমিয়ে আছে

তুমি বললে, আমার কোন স্বপ্ন নেই। আমি শুনে খুশি হলাম-
আশ্চার্যান্বিতও বটে। স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে?
অবুঝ শিশু, অন্ধ-বোবা সবার যদি স্বপ্ন থাকে
তোমার কেন থাকতে নেই।
তুমিতো পরিপূর্ণ মানবীÑ কোন জড় পদার্থ নও।

সমীকরণটা কেমন এলোমেলো কোন সুত্রেই ঠিক মিলল না।
স্বপ্ন আছে বলে আমরা আছি, আমারা থাকলে স্বপ্নও থাকবে।
তুমি না চাইলেও ঘুরে ফিরে স্বপ্ন আসবে তোমার কাছে।
তোমাকে পথ দেখাবে, ঘুম পাড়ানি গান শোনাবেÑ
নিয়ে যাবে সীমাহীন গন্তব্যে।

একদিন তুমি স্বপ্নের দেখা পাবে, হবে স্বপ্নের সাথে খুনসুটি।
স্বপ্নের সাথে হবে ঘর-গেরস্থালি, প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
এখনো তোমার বুঝতে বাকি- তোমার স্বপ্ন ঘুমিয়ে আছে তোমার মনের গহীণে।

কালকিনি, মাদারীপুর
০৭ এপ্রিল ২০১৩
০১৭২৫৪৩০৭৬৩

বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৩

শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার কৃতি সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ও দহন(সাহিত্যপত্র)- এর নির্বাহী সম্পাদক জাহিদ হাসান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রিয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হওয়ায় কালকিনিবাসীর পক্ষ থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

শুভেচ্ছান্তেÑ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সম্পাদক, দহন(সাহিত্যপত্র)।

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ-এর প্রেমের কবিতা

১. তোমাকে দিলাম

তোমাকে দিলাম ভালোবাসার প্রথম প্রহর-
ভোরের শিশির একখন্ড আকাশ।
তোমাকে দিলাম ফাগুনের রঙ- দখিনা বাতাস।
তোমাকে দিলাম সবটুকু অনুভূতি- জীবনের কিছু স্মৃতি।

তোমাকে দিলাম ডাহুকের লুকোচুরি,
মাছরাঙার শিকার স্বচ্ছ কালোজল দিঘির।
তোমাকে দিলাম সবটুকু আবেগ- জীবনের গতিবেগ।
তোমাকে দিলাম আকাশের নীল- সাগরের শঙ্খচিল।
তোমাকে দিলাম এই আমি সবটুকু প্রেম আমার
অনাকাক্সিক্ষত ছোঁয়া উষ্ণতার।

২. অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা

একটি সুদৃশ্য মোড়ক আমায় বিহ্বল করে।
কি আছে এর অন্তর্নিহিত সারমর্ম?
প্রশ্নের পাহাড় বুকে নিয়ে ঝুকে পড়িÑ
প্রতিটি ভাঁজ খুলতে খুলতে আমি ক্লান্ত।
কাক্সিক্ষত বস্তুর কোন গন্ধ নেই।
মনে কল্পনার নানাবিধ জাল বুনি!
মোড়কের ভেতর মোড়কÑÑ
এক  
দুই   
তিন...
চতুর্দশ মোড়ক খুলতেই
বাতাসে উড়ে যায় ছোট্ট চিরকুট।
তাতে লেখাÑ
‘বাতাসে উড়িয়ে দিলাম আমার প্রথম ভালোবাসা।’


৩. কোথাও পাবি না খুঁজে প্রেম

তাকিয়ে দেখ জীবনের যত ছবি
খুঁজে পাবি হাজার রঙ,
জীবনের অলি-গলি পার হয়ে
সেজেছিস কতবার সঙ।

লাল-নীল-বেগুনি কিংবা হলুদ
স্বপ্নের রঙ শাদা-কালো,
রঙিন ছবির মাঝে জীবনের আড়ালে
কোথাও পাবি না খুঁজে আলো।

চেয়ে চেয়ে দেখ কত ঝরা ফুল
পেতে পারিস কত গন্ধ,
কোথাও পাবি না খুঁজে প্রেম
হলে চোখ থাকতে অন্ধ।

কালকিনি, মাদারীপুর
০৩ এপ্রিল ২০১৩

মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

গান গেয়ে সংসারের খরচ জোগান

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ:
‘এক সময় পালাগান গাইতাম। এহোন আর পালাগানের চল নাই। তাই জারিগান বান্ধি। এতেই সংসার চলে। মাঝে মাঝে সংসারে একটু-আধটু টানাটানি হয়। কি করুম? বোঝার পর থিক্যাই গানরে সঙ্গী কইরা লইছি। আর ছাড়তে পারি নাই। চার পোলারে দলে রাখছি। বাপ-বেটারা মিইল্যা দল চালাই। আমার সুখ তাতেই। বাউল সম্রাট শাহ আ: করিমের মত কইতে অয়- ‘আর কিছু চাইনা মনে গান ছাড়া।’ কথাগুলো বলছিলেন গ্রামবাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক আ: সাত্তার বয়াতী। তার পরিবারের সবাই শিল্পী। সংগীত তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। গান গেয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। বিশাল এ পরিবারের ভরন-পোষণ জোগান তারা গানে গানে।
এক সময় গ্রামবাংলায় পালাগান, সারি গান, পুঁথি পাঠ, যাত্রাপালা ও জারি গান ছিল অহরহ। সে সব গ্রামীণ সংস্কৃতি এখন বহুলাংশে লোপ পেয়েছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে শিল্পীরা ছুটছে দিগি¦দিক। কিন্তু মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের কাচারিকান্দি গ্রামে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করা আঃ সাত্তার বয়াতি তার পুরো পরিবার নিয়ে ধরে রেখেছেন সেই ঐতিহ্য। কেবল গান গেয়েই সংসারের খরচ জোগান তারা।
আঃ সাত্তার বয়াতী এনায়েতনগর জে.এম উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। অর্থাভাবে আর লেখা-পড়ার সুযোগ হয়নি তার। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি তার ঝোক ছিল। তাই পেশা হিসেবে বেছে নেন সংগীত। ১৯৬৫ সালে ২০ বছর বয়সে ওস্তাদ জালাল বয়াতির সাথে সারি গানের মাধ্যমে সংগীত জীবনে প্রবেশ করেন। তার সাথে কাজ করেন ৫ বছর। এরপর নিজেই একটি গানের দল তৈরি করেন। তার দলের নাম রাখেন ‘পল্লী কবিয়াল সাংস্কৃতিক দল’। শুরুর দিকে পালাগান করতেন। তখন শরীয়ত-মারেফাত, নারী-পুরুষ, হিন্দু-মুসলিম, রাত্রি-দিনসহ একাধিক পালাগান গেয়েছেন। প্রতিপক্ষ হিসাবে থাকতেন জালাল বয়াতি. সফিজদ্দিন বয়াতী, রশিদ বয়াতী, জয়নাল বয়াতী, মঞ্জুরানী সরকার, রেখা বয়াতী, রুনা সরকার ও মাকসুদা বয়াতী।
পালাগানের কদর কমে গেলে অনেক শিল্পী দল ছেড়ে চলে যান। আঃ সত্তার বয়াতী শুরু করেন জারি গান। নিজের সন্তানদের শিক্ষা দিয়ে টিকিয়ে রাখেন গানের দল। এরপর থেকে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, এনজিও ও ব্যক্তির উদ্যোগে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, দুর্নীতি, বৃক্ষ রোপন বা বনায়ণ, কৃষি, মৎস্য, এইডস, মাদক, দেশাত্মবোধক ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির নির্বাচনী জারী গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন।
দলের বর্তমান শিল্পীরা তার পরিবারের সদস্য। চার ছেলে ও মেয়ের ঘরের নাতিকে নিয়ে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ৬ জন। বড় ছেলে জামাল হোসেন হারমোনিয়াম বাদক এবং গায়ক। মেজ ছেলে রুবেল গান গাইতো। তিন বছর আগে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। স্ত্রী, ২ মেয়ে, ১ ছেলের দায়ভার এখন আঃ সত্তার বয়াতীর ওপর। সেজ ছেলে আক্তার হোসেন ঢোল বাদক। চার নম্বর ছেলে সুজন বাজায় মন্দিরা। ছোট ছেলে আকাশ দেওয়ান শিশুশিল্পী। মেয়ের ঘরের নাতি পান্নাও তাদের দলের শিশুশিল্পী।
তারা এ পর্য়ন্ত ঢাকা, ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, খুলনা ও ভোলাসহ অনেক জেলা ঘুরে ঘুরে গান গেয়েছেন। প্রতিমাসে ৭-৮ টা জারি গানের অনুষ্ঠান করেন। প্রতি অনুষ্ঠানে সর্বনিু ২২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত পান। এছাড়া দুঃস্থ শিল্পী হিসাবে সরকারের কাছ থেকে একবছরে প্রতিমাসে ৭০০ টাকা করে ভাতা পেয়েছেন। বর্তমানে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা পান। এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, কালকিনি এডিপি’র তালিকাভূক্ত গানের দল হিসাবে মাসে চারটা অনুষ্ঠান করে প্রতি অনুষ্ঠানে ২২০০ টাকা করে মোট ৮৮০০ টাকা পান। 
গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহের ব্যাপারে আঃ সাত্তার বয়াতী বলেন,‘এরশাদের আমলে গানের জন্য সাটিভেট (সার্টিফিকেট) পাইছি। বর্তমানে কিছুটা দুরবস্থার মধ্যে আছি। অনুষ্ঠান না পাইলে সংসার চালাইতে একটু কষ্ট হয়। গান গাইয়া ছেলেগো ব্যবসা করার ব্যবস্থা কইরা দিতাছি। তবে আমার জীবন-মরণ গান। যতদিন আছি, গান লইয়াই আছি। মইরা গেলে পোলাপানে দল চালাইবো কি না জানিনা।’

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, কালকিনি
১৩.০৩.২০১৩