শনিবার, ১২ মে, ২০১২

মাদারীপুরের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা অবলম্বনে ‘একটাই চাওয়া’

আ জ ম কামাল :
‘স্বাধীনতার ৪০ বছর ও শিল্পের আলোয় মহান মুক্তিযুদ্ধ’- স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর এ মহতী আয়োজনের জন্য শিল্পকলা একাডেমীর মহা পরিচালক লিয়াকত আলী লাকীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সাথে সাথে জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মাদারীপুরের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি ও সদস্য সচিবসহ সবার প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। এছাড়া নাটকের প্রাণ মাদারীপুর সরকারি নাজিমুদ্দিন কলেজ ও কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে কলেজ পর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক ‘একটাই চাওয়া’ মঞ্চস্থ করতে পেরে আমি আনন্দিত ।
গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় মাদারীপুরের স্বাধীনতা অঙ্গনের মুক্তমঞ্চে ও গত ৫ মে ফরিদপুর শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ‘একটাই চাওয়া’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। নাটকে আমীরন চরিত্রে মাহমুদা খান লিটা ও ঝুমা, রফিক চরিত্রে সাজ্জাদ হোসেন, সাজু চরিত্রে লুবনা জাহান নিপা, বয়াতি চরিত্রে আমি আজিজুল ইসলাাম স্বপন, বাদল চরিত্রে সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, মানিক চরিত্রে বি এ কে মামুন ও আশিষ রায়, রফিকের মা চরিত্রে শাকিলা আক্তার, ওয়াজেদ আলী চরিত্রে নাহিদুল ইসলাম মুকুল, কেতর আলী চরিত্রে সঞ্জীব তালুকদার, মেজর চরিত্রে শান্ত কুমার, মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রে মৃণাল কান্তি বালা , বাচ্চুর বাবা চরিত্রে নির্মল মন্ডল নিলয়, পাক হানাদার চরিত্রে মাইনুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলামের অভিনয় দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে।
মাদারীপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে সুতীক্ষè মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ‘একটাই চাওয়া’ নাটকটি রচনা করেন আজিজুল ইসলাম স্বপন। তার রচনার ক্ষেত্রে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নাটক বিভাগের ছাত্র সালাহ উদ্দিন মাহমুদ অনেক পরিশ্রম করে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংলাপ সংশোধনের মাধ্যমে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে নাটকটিকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাদের সমন্বয়ে আমি নাট্য প্রশিক্ষক আ জ ম কামাল নির্দেশনার দায়িত্ব নিয়ে নাটকটিকে প্রাণবন্ত করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া বিভিন্নভাবে যারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মাদারীপুর জেলায় ঘটে যাওয়া বাস্তব ঘটনা ফুটে উঠেছে ‘ একটাই চাওয়া’ নাটকে। সোলেমান বয়াতির সংসারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যেতে থাকে নাটকের কাহিনী। সোলেমান বয়াতীর স্ত্রী আমিরনের সম্ভ্রম হারানো। পাক হানাদারের নির্যাতনে সাজুর মৃত্যু। যুদ্ধে গিয়ে শেষ অবধি রফিকের ফিরে না আসা। কিশোর বাচ্চুর যুদ্ধে অংশগ্রহণ। রাজাকার ওয়াজেদ আলী ও কেতর আলীর কুদৃষ্টি একাত্তরের পৈশাচিক দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছে। সুফিয়া, বেনু, পান্না ও নুরুল ইসলামের আত্মত্যাগ দর্শকদের আবেগাপ্লুত করে তোলে। সবশেষে বাচ্চুর বাবা, বয়াতী, বাদল ও মানিকের কন্ঠে দৃঢ়তার সাথে উচ্চারিত হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি। অভিনেতাদের সাথে সাথে দর্শকরাও গর্জে ওঠে।

আ জ ম কামাল
নির্দেশক,
একটাই চাওয়া,
জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মাদারীপুর।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন