:: এম এস আই সাগর ::
একবিংশ শতাব্দীর সূচনাতে যে সকল উদীয়মান তরুণ কবির আবির্ভাব ঘটেছে তাদের মধ্যে অন্যতম লিটলম্যাগ রচয়িতা সম্পাদক কবি আরিফুল ইসলাম। হৃদয়ের লুকায়িত আবেগ, অনুভূতি ও আত্মপ্রত্যয়টুকুই সাধারণত কবি-সাহিত্যিকরা বিভিন্ন বাচনভঙ্গি, কাব্যরস, গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। আবার উপন্যাস, নাটক কিংবা চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও হতে পারে। মূলকথা সমাজে ঘটে যাওয়া প্রতিটি বাস্তব চিত্রের প্রতিচ্ছবি নিজের মত করে সাজিয়ে কবি-সাহিত্যকরা প্রকাশ করে থাকেন। তারই এক জ্বলন্ত প্রমাণ কবি ও ঔপন্যাসিক আরিফুল ইসলাম। বর্তমান তরুণ সমাজ যখন নেশার ঘোরে আচ্ছন্ন; তখন কবি ও সম্পাদক আরিফুল ইসলাম এর জীবন সৃজনশীল নেশায় ঢুলুঢুলু।
আরিফুল ইসলাম ১৯৮৩ সালের ১৫ মে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার কিংজাল্লা নামক এক অজপাড়াগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাবিবুর রহমান ও মাতা মোছাঃ ফাতেমা বেগমের পঞ্চম সন্তান তিনি। কবির শৈশব কেটেছে আঁকাবাঁকা মেঠোপথের মত। ছেলেবেলা থেকেই ডানপিটে স্বভাবের এই তুখোড় কিশোরের কাছে লেখাপড়া ছিল অস্বস্তিকর। কিন্তু সাহিত্যের প্রতি তার ছিল অকৃত্রিম অনুরাগ। যার ফলশ্র“তিতে প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডি না পেরোতেই ১৯৯৬ সালে দৈনিক পত্রিকাতে ‘রক্তের বিনিময়ে’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। কবিতাটির দু’টি লাইন উদ্ধৃতি না দিলেই নয়-
‘রক্তে খেয়েছে স্বাধীনতার তারছিড়াঁ বিনিময়
বাঙালি সয়েছে তারও প্রতিফলন।’
এ থেকে অনুমান করা যায়, কবি তার কবিতায় দেশপ্রেমের নিবীড় প্রেমে পাগল ছিলেন। এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগি না হওয়ায় তার শিক্ষাজীবন বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি। তবে তিনি যথেষ্ঠ মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমাপনিতে বৃত্তি অর্জন করেছিলেন। কৃতিতের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন ইসলামপুরের বিখ্যাত ইসলামপুর নেকজাহান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। স্থানীয় কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে কবি শিক্ষা জীবনের ইতি টানেন রীতিমত বাধ্য হয়েই। কিন্তু তার সাহিত্য জীবন থেমে থাকেনি। এরই মধ্যে বেরিয়ে আসে তার কলম থেকে কালজয়ী সব কবিতার পঙক্তি। তার উল্লেখ্যযোগ্য কবিতার মধ্যে ‘যা বাস্তব’,‘আমি বিদ্রোহী’,‘রক্তে বাংলাদেশ’,‘রচয়িতার কাছে খোলা চিঠি’,‘নন্দিনীর কাছে খোলা চিঠি’,‘আমি পূজারী নই’,‘কবিতায় আমি পথকলি’,‘কবিতায় আমি পথকলি-২’,‘কবি’,‘কলমের আতœকথা’,‘বিদায় অতপর বেঁচে থাকা’,‘মুক্তিযোদ্ধা বাতেন বলছি’,‘আমন্ত্রণ’,‘অধিকার চাই’,‘আমি বাঙালি’,‘স্বরসতীর প্রেম’,‘আমি হিন্দুদের অনুসারী’ প্রভৃতি।
তার কবিতায় ঢেউ খেলেছে প্রেম, প্রেমকে দিয়েছেন হাজারো রূপ। ‘নন্দিনীর কাছে খোলা চিঠি’ তার এক অনবদ্য ও জ্বলন্ত প্রমাণ-
“চন্দ্রাণী বলেছিলো-
পাঁচদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে আসছি!
তোমার অপেক্ষার অবসান ঘটাতে
অন্তরের অব্যক্ত কথনগুলোকে-
উজাড় করে দেবো তোমার তরে
নগ্ন পায়ে হেঁটে হেঁটে পাহাড়ের চূড়াঁয়-
গিয়ে ঘপটি মেরে বসে থাকবো
রাতকে সন্ধ্যার সাথে সন্ধি করে দেবো
নদীর ভরা যৌবন দেখতে দেখতে...
দু’জনে মিলে একাকার হয়ে যাবো।
আমি পোড়ামুখে হেসে বলেছিলাম,
ভার্সিটি কখনো কি জেলখানা হয় ?”
তিনি ধর্মের ভেদাভেদ ভাঙতে সদা অস্থির। তাই তাকে পড়তে হয়েছে অনেক বির্তকের মধ্যে। তারপরও তার কলম তাকে ছুটি দেয়নি কখনো। তার কলমের কালি তার সাথেই সুর মিলিয়ে লিখেছে বির্তকের কবিতা “আমন্ত্রণ”-
“ভেঙে ফেল তোমার অস্পষ্ট মন্দির নামের পবিত্র উপাসনালয়
যেখানে অমানুষের রাজ্যে বসবাস করে অপদার্থ, বেহায়া আর মানুষ্যরূপী কিছু শয়তান
ভগবানের নামে মাটির স্বর্গে যারা ধোয়া উড়িয়ে উড়িয়ে পাপ করেই চলেছে দিন দিন
আমি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী! কারণ আমি মানুষ রুপে জন্ম নিয়েছি কুকুরের বেশে নয়
জন্মের সাত জনম আগে আমি হয়ত সনাতন অথবা পুরোহিত ছিলাম
খ্রিস্টান হয়ত আমার প্রিয় ধর্ম ছিল অথবা বৌদ্ধ ছিলাম হয়ত”
তাকে ডাকা যেতে পারে টোকাইদের সহযোদ্ধা বলে। কারণ তিনি ব্যতিক্রমভাবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তার কবিতায় পথকলিদের। তার মন কেঁদেছে পথকলিদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে। লিপিবদ্ধ করেছেন অনেক কবিতা তাদের নিয়ে। তাই তিনি অবশ্যই আর সব কবিদের চেয়ে একটু আলাদা। একদিকে দেশ, একদিকে ধর্ম, একদিকে পথকলি। কোথায় নেই তার কলমের বিচরণ। পথকলির প্রতি তার ভালবাসা সত্যি প্রশংসনীয়। তিনি এভাবেই গেঁথে দিয়েছেন ‘কবিতায় আমি পথকলি-২’ কবিতায়-
“সমাজ বদলাতে হলে আগে আমার অধিকার দিতে হবে
দিতে হবে পথকলি ভাতা, পথকলি পেনশন, মহার্ঘ্য ভাতা-
সম্মান, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা অথবা ত্রাণের সবটুকু অধিকার
আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা!
তোমরা দেশের জন্য একবার যুদ্ধ করেছ; আর আমি যুদ্ধ করি প্রতিনিয়ত!।”
সমাজের অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন, মারামারি, হত্যা এগুলো দেখে তিনি চুপ ছিলেন না । লিখে গেছেন প্রতিবাদী হিসেবে অনেক বিদ্রোহী কবিতা। যেমনটি তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন “আমি বিদ্রোহী” কবিতায়-
“যুদ্ধে যাবো মা, আরেক বার যুদ্ধে যাবো
৭১’ এর যুদ্ধে যারা রাজাকার, আলবদর ছিল
তাদের ধ্বংস করার যুদ্ধে
আমি আজ বিদ্রোহী
রক্তে আমার বিস্ফোরিত হচ্ছে
জ্বালা মেটানোর ইচ্ছাগুলো
আমি উন্মাদ মাগো, বড্ড উন্মাদ।”
এভাবেই লিখেছেন তিনি অনেক কবিতা। একদিকে দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ; আরেক দিকে সাহিত্যকর্ম সত্যি আশ্চর্যজনক। তা তার লিখনিতে বুঝে নেবে যে কোন পাঠক। তার কর্ম জীবনের শুরুটা আরও চমকে দেওয়ার মত। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার কর্মজীবন শুরু। তারপর থেকেই চলছে জীবনের সাথে যুদ্ধ। তারপরও থেমে থাকেনি তার সাহিত্যকর্ম। প্রথমে বাবার হাত ধরেই কর্ম শুরু করেন। মুদির দোকানে দীর্ঘদিন ব্যবসা করেন তার বাবার সাখে। তারপর তিনি পরিবারকে না জানিয়ে চলে যান চট্টগ্রাম । সেখানে জাহাজ ঘাঁটিতে কাজ করেন দুই বছর। তিনি ছিলেন জাহাজের মাল খালাসের সুপার ভাইজার। সেখানেও তিনি বেশিদিন টিকতে পারেননি। চলে আসেন ঢাকায় তার এক চাচাতো ভাইয়ের বাসায়। চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় একবছর চাকুরি করেন একটি কাপড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর ইনচার্জ হিসাবে। সেটাও বেশিদিন টেকেনি। তারপর সোজা চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। এ যেন নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা। বাড়িতে এসে আবার চলে তার কর্মচেষ্টা। এবার চাকুরী নেন বেসরকারী ট্রেনে সুপারভাইজার পদে। চাকরির সুবাদে তিনি ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত। আর কুড়িয়েছেন হাজারো অভিজ্ঞতা। এ থেকে প্রমাণিত হয়- কবি শুধু নিজ এলাকা নয়, সারা বাংলার সংগতি-অসংগতি সব কিছুই পাওয়া যায় তার কবিতায়। একবছর সততার সাথে চাকুরী করেন তিনি। ভালো না লাগায় আবার চলে আসেন। কর্মের স্বাদ যেন কোন ভাবেই মিটতে চায় না তার। গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকায় তিনি অল্প কিছুদিন জুতার কারখানায় চাকুরী করেন। তারপর এলাকার কোন এক শিল্পপতির সাহায্যে চলে যান চাঁদপুর। তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। চাঁদপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলম খানের ম্যানেজার হিসাবে দীর্ঘদিন (প্রায় ৪ বছর) চাকুরী করেন। এরপর ২০১০ সালের দিকে নিজগ্রামে ফিরে আসেন মালিককে না বলে। তারপরই তার জীবনের একাকী পথ চলা শুরু। বর্তমানে তিনি ভাই ভাই গ্র“পের ডিজিটাল টেকনোলজি এর নির্বাহী পরিচালক। শুরু করেন সাহিত্যচর্চা। রচয়িতা সাহিত্য পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি উইড (অসহায় জনগোষ্ঠির জন্য একটি বিদ্যালয়) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। রাসান-২০১২ (একটি শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
দুই বাংলার বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা ‘রচয়িতা’ সম্পাদনা করায় সত্যি তার সাহস অনুজদের আশ্চর্যের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে ভাবলে বিন্দুমাত্র ভুল হবেনা। রচয়িতা সম্পাদনা করে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। বয়সে তরুণ এবং সম্পাদক হিসেবে নবীন হলেও তিনি ‘রচয়িতা’ প্রকাশ করে প্রমাণ করে দিয়েছেন, বয়স দিয়ে সাহিত্যিকদের মেধা মাপা যায় না বরং সাহিত্যিকের লেখাই তার জ্ঞানগড়িমা, দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকে। অর্থাৎ বয়স কারো যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা মাপার মাপকাঠি নয়। দেশ-বিদেশের অনেক সুনামধণ্য কবি-লেখকরা লিখেন তার রচয়িতায়। প্রতিবছর কবির নিজের অর্থায়নে ‘রচয়িতা সাহিত্য পরিষদ’ কর্তৃক রচয়িতার বাছাইকৃত কবি লেখকদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন। জামালপুর জেলার জন্য অবশ্যই তা গর্বের বিষয়। তিনি একমাত্র সম্পাদক; যিনি সর্বপ্রথম ইসলামপুরে কবি-লেখকদের সম্মানিত করেছেন। করে যাচ্ছেন। তিনি ‘কাব্য কথা’ লিটলম্যাগ এর নির্বাহী সম্পাদক পদে নিয়োজিত আছেন। সদ্য প্রকাশিত ‘রচয়িতা’ (চার বাংলার ১০০ কবি ও কবিতা) সংখ্যাটি বেশ আলোচনার ঝড় তুলেছে লিটলম্যাগ মহলে। দেশ ও দেশের বাহিরের অনেক সনামধণ্য কবি-লেখকগণ লিখেছেন এ সংখ্যায়। এ যাবৎ ‘রচয়িতা’ প্রসঙ্গে দৈনিক যায়যায়দিন, দৈনিক ইত্তেফাক, বগুড়ার বিখ্যাত দৈনিক করতোয়া, জাতীয় অনলাইন প্রতিমুহূর্ত ডটকম, জাতীয় সাহিত্যবিষয়ক অনলাইন অন্যধারা ডটকম ও মাদারীপুরনিউজ ডটকম-এ আলোচনা স্থান পেয়েছে।
এছাড়াও ডজন খানেক অনলাইন পত্রিকায় এসেছে রচয়িতার আলোচনা। কবি আরিফুল ইসলামকে নিয়ে বিশেষ আলোচনা ছাপা হয়েছে জামালপুরের সনামখ্যাত ‘দৈনিক আজকের জামালপুর’ পত্রিকায়। মাদারীপুর জেলার কালকিনি প্রেস ক্লাবে রচয়িতার মোড়ক উন্মোচন করেছেন রচয়িতার সহ-সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। দ্বিতীয় বারের মত মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে সহ-সম্পাদক সুমন হাফিজের সভাপতিত্বে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত শান্ত মরিয়ম এন্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র ক্যাম্পাসে। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় কবি তার নিজের গুণে কত বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
তিনি একাধারে কবি, সম্পাদক, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক। তাকে সব্যসাচী বললেও অত্যুক্তি হবেনা। তার লেখা প্রথম উপন্যাস ‘অপেক্ষার শেষ প্রহর...’ ২০১১ সালে প্রগতি প্রকাশনী, আরামবাগ, ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়ে সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উপন্যাসে তিনি সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন যা ভাবিয়ে তুলেছে অনেক পাঠকের অন্তর। আলোচনা এসেছে প্রায় ১০-১৫ টি আঞ্চলিক পত্রিকায়। তার লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কালোমুখোশ’। প্রকাশক সৈকত আহমেদ বিল্লালের সাহয্যে প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে। রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে লেখায় তা স্থানীয় প্রশাসনের কারণে বিক্রি নিষিদ্ধ হয়। ‘কালো মুখোশ’ এর একটা কবিতা “মানুষ ঝালাই” এরকম-
“দেশটা তোর বাবার বলেই দেখাস্ যত ক্ষমতা
ভেবে দেখ্ কি হবে তোর ক্ষেপে যদি জনতা”
তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘একাকী জীবন’। নিরেট প্রেম ধরা দিয়েছিল কবির কলমে। বাস্তববাদী প্রেম কতটা নির্মল হয় তা বোঝাতে চেয়েছেন কবি তার একাকী জীবন কাব্যগ্রন্থের “আটটি বছর পর” কবিতায়-
ভুল করেই আবার আসার অপেক্ষায়-
হাতে হাত,আর দু-বাহুর স্পর্শে চরম তৃপ্তি প্রাপ্তির প্রত্যাশায়
যৌবন যেখানে দাঁড়িয়ে হাস্যরসে
শূণ্য অযৌবনের লাঠির উপর ভর করে।”
তার সাহিত্য কর্ম আর জীবন কর্ম সত্যি ভাবিয়ে তোলার মতই।
কবি আরিফুল ইসলাম অনেক জায়গায় সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন অনেক সম্মান। ২০০৬ এ পেয়েছেন চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক কবিতার জন্য বিশেষ সনদ ও কবি, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবি সেলিনা পারভিন এর স্বরণে ঢাকা পাবলিক লাইব্ররিতে আয়োজিত বিশেষ ক্রোড়পত্রে কবিতা লেখার জন্য পেয়েছেন বিশেষ সনদ ২০১৩। এ যাবৎ কবির অনেক কবিতা গল্প, উপন্যাস, বাংলাদেশসহ পশ্চিম বঙ্গের অনেক সনামধণ্য লিটলম্যাগে প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক: এম এস আই সাগর
কবি, শিক্ষক, সম্পাদক ও আলোচক
ইসলামপুর, জামালপুর
একবিংশ শতাব্দীর সূচনাতে যে সকল উদীয়মান তরুণ কবির আবির্ভাব ঘটেছে তাদের মধ্যে অন্যতম লিটলম্যাগ রচয়িতা সম্পাদক কবি আরিফুল ইসলাম। হৃদয়ের লুকায়িত আবেগ, অনুভূতি ও আত্মপ্রত্যয়টুকুই সাধারণত কবি-সাহিত্যিকরা বিভিন্ন বাচনভঙ্গি, কাব্যরস, গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। আবার উপন্যাস, নাটক কিংবা চলচ্চিত্রের মাধ্যমেও হতে পারে। মূলকথা সমাজে ঘটে যাওয়া প্রতিটি বাস্তব চিত্রের প্রতিচ্ছবি নিজের মত করে সাজিয়ে কবি-সাহিত্যকরা প্রকাশ করে থাকেন। তারই এক জ্বলন্ত প্রমাণ কবি ও ঔপন্যাসিক আরিফুল ইসলাম। বর্তমান তরুণ সমাজ যখন নেশার ঘোরে আচ্ছন্ন; তখন কবি ও সম্পাদক আরিফুল ইসলাম এর জীবন সৃজনশীল নেশায় ঢুলুঢুলু।
আরিফুল ইসলাম ১৯৮৩ সালের ১৫ মে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার কিংজাল্লা নামক এক অজপাড়াগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাবিবুর রহমান ও মাতা মোছাঃ ফাতেমা বেগমের পঞ্চম সন্তান তিনি। কবির শৈশব কেটেছে আঁকাবাঁকা মেঠোপথের মত। ছেলেবেলা থেকেই ডানপিটে স্বভাবের এই তুখোড় কিশোরের কাছে লেখাপড়া ছিল অস্বস্তিকর। কিন্তু সাহিত্যের প্রতি তার ছিল অকৃত্রিম অনুরাগ। যার ফলশ্র“তিতে প্রাথমিক শিক্ষার গন্ডি না পেরোতেই ১৯৯৬ সালে দৈনিক পত্রিকাতে ‘রক্তের বিনিময়ে’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। কবিতাটির দু’টি লাইন উদ্ধৃতি না দিলেই নয়-
‘রক্তে খেয়েছে স্বাধীনতার তারছিড়াঁ বিনিময়
বাঙালি সয়েছে তারও প্রতিফলন।’
এ থেকে অনুমান করা যায়, কবি তার কবিতায় দেশপ্রেমের নিবীড় প্রেমে পাগল ছিলেন। এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগি না হওয়ায় তার শিক্ষাজীবন বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি। তবে তিনি যথেষ্ঠ মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমাপনিতে বৃত্তি অর্জন করেছিলেন। কৃতিতের সাথে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন ইসলামপুরের বিখ্যাত ইসলামপুর নেকজাহান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। স্থানীয় কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে কবি শিক্ষা জীবনের ইতি টানেন রীতিমত বাধ্য হয়েই। কিন্তু তার সাহিত্য জীবন থেমে থাকেনি। এরই মধ্যে বেরিয়ে আসে তার কলম থেকে কালজয়ী সব কবিতার পঙক্তি। তার উল্লেখ্যযোগ্য কবিতার মধ্যে ‘যা বাস্তব’,‘আমি বিদ্রোহী’,‘রক্তে বাংলাদেশ’,‘রচয়িতার কাছে খোলা চিঠি’,‘নন্দিনীর কাছে খোলা চিঠি’,‘আমি পূজারী নই’,‘কবিতায় আমি পথকলি’,‘কবিতায় আমি পথকলি-২’,‘কবি’,‘কলমের আতœকথা’,‘বিদায় অতপর বেঁচে থাকা’,‘মুক্তিযোদ্ধা বাতেন বলছি’,‘আমন্ত্রণ’,‘অধিকার চাই’,‘আমি বাঙালি’,‘স্বরসতীর প্রেম’,‘আমি হিন্দুদের অনুসারী’ প্রভৃতি।
তার কবিতায় ঢেউ খেলেছে প্রেম, প্রেমকে দিয়েছেন হাজারো রূপ। ‘নন্দিনীর কাছে খোলা চিঠি’ তার এক অনবদ্য ও জ্বলন্ত প্রমাণ-
“চন্দ্রাণী বলেছিলো-
পাঁচদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে আসছি!
তোমার অপেক্ষার অবসান ঘটাতে
অন্তরের অব্যক্ত কথনগুলোকে-
উজাড় করে দেবো তোমার তরে
নগ্ন পায়ে হেঁটে হেঁটে পাহাড়ের চূড়াঁয়-
গিয়ে ঘপটি মেরে বসে থাকবো
রাতকে সন্ধ্যার সাথে সন্ধি করে দেবো
নদীর ভরা যৌবন দেখতে দেখতে...
দু’জনে মিলে একাকার হয়ে যাবো।
আমি পোড়ামুখে হেসে বলেছিলাম,
ভার্সিটি কখনো কি জেলখানা হয় ?”
তিনি ধর্মের ভেদাভেদ ভাঙতে সদা অস্থির। তাই তাকে পড়তে হয়েছে অনেক বির্তকের মধ্যে। তারপরও তার কলম তাকে ছুটি দেয়নি কখনো। তার কলমের কালি তার সাথেই সুর মিলিয়ে লিখেছে বির্তকের কবিতা “আমন্ত্রণ”-
“ভেঙে ফেল তোমার অস্পষ্ট মন্দির নামের পবিত্র উপাসনালয়
যেখানে অমানুষের রাজ্যে বসবাস করে অপদার্থ, বেহায়া আর মানুষ্যরূপী কিছু শয়তান
ভগবানের নামে মাটির স্বর্গে যারা ধোয়া উড়িয়ে উড়িয়ে পাপ করেই চলেছে দিন দিন
আমি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী! কারণ আমি মানুষ রুপে জন্ম নিয়েছি কুকুরের বেশে নয়
জন্মের সাত জনম আগে আমি হয়ত সনাতন অথবা পুরোহিত ছিলাম
খ্রিস্টান হয়ত আমার প্রিয় ধর্ম ছিল অথবা বৌদ্ধ ছিলাম হয়ত”
তাকে ডাকা যেতে পারে টোকাইদের সহযোদ্ধা বলে। কারণ তিনি ব্যতিক্রমভাবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তার কবিতায় পথকলিদের। তার মন কেঁদেছে পথকলিদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে। লিপিবদ্ধ করেছেন অনেক কবিতা তাদের নিয়ে। তাই তিনি অবশ্যই আর সব কবিদের চেয়ে একটু আলাদা। একদিকে দেশ, একদিকে ধর্ম, একদিকে পথকলি। কোথায় নেই তার কলমের বিচরণ। পথকলির প্রতি তার ভালবাসা সত্যি প্রশংসনীয়। তিনি এভাবেই গেঁথে দিয়েছেন ‘কবিতায় আমি পথকলি-২’ কবিতায়-
“সমাজ বদলাতে হলে আগে আমার অধিকার দিতে হবে
দিতে হবে পথকলি ভাতা, পথকলি পেনশন, মহার্ঘ্য ভাতা-
সম্মান, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা অথবা ত্রাণের সবটুকু অধিকার
আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা!
তোমরা দেশের জন্য একবার যুদ্ধ করেছ; আর আমি যুদ্ধ করি প্রতিনিয়ত!।”
সমাজের অন্যায়, অত্যাচার, নিপীড়ন, মারামারি, হত্যা এগুলো দেখে তিনি চুপ ছিলেন না । লিখে গেছেন প্রতিবাদী হিসেবে অনেক বিদ্রোহী কবিতা। যেমনটি তিনি লিপিবদ্ধ করেছেন “আমি বিদ্রোহী” কবিতায়-
“যুদ্ধে যাবো মা, আরেক বার যুদ্ধে যাবো
৭১’ এর যুদ্ধে যারা রাজাকার, আলবদর ছিল
তাদের ধ্বংস করার যুদ্ধে
আমি আজ বিদ্রোহী
রক্তে আমার বিস্ফোরিত হচ্ছে
জ্বালা মেটানোর ইচ্ছাগুলো
আমি উন্মাদ মাগো, বড্ড উন্মাদ।”
এভাবেই লিখেছেন তিনি অনেক কবিতা। একদিকে দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ; আরেক দিকে সাহিত্যকর্ম সত্যি আশ্চর্যজনক। তা তার লিখনিতে বুঝে নেবে যে কোন পাঠক। তার কর্ম জীবনের শুরুটা আরও চমকে দেওয়ার মত। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার কর্মজীবন শুরু। তারপর থেকেই চলছে জীবনের সাথে যুদ্ধ। তারপরও থেমে থাকেনি তার সাহিত্যকর্ম। প্রথমে বাবার হাত ধরেই কর্ম শুরু করেন। মুদির দোকানে দীর্ঘদিন ব্যবসা করেন তার বাবার সাখে। তারপর তিনি পরিবারকে না জানিয়ে চলে যান চট্টগ্রাম । সেখানে জাহাজ ঘাঁটিতে কাজ করেন দুই বছর। তিনি ছিলেন জাহাজের মাল খালাসের সুপার ভাইজার। সেখানেও তিনি বেশিদিন টিকতে পারেননি। চলে আসেন ঢাকায় তার এক চাচাতো ভাইয়ের বাসায়। চাচাতো ভাইয়ের সহযোগিতায় একবছর চাকুরি করেন একটি কাপড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর ইনচার্জ হিসাবে। সেটাও বেশিদিন টেকেনি। তারপর সোজা চলে আসেন গ্রামের বাড়িতে। এ যেন নাড়ীর টানে ঘরে ফেরা। বাড়িতে এসে আবার চলে তার কর্মচেষ্টা। এবার চাকুরী নেন বেসরকারী ট্রেনে সুপারভাইজার পদে। চাকরির সুবাদে তিনি ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত। আর কুড়িয়েছেন হাজারো অভিজ্ঞতা। এ থেকে প্রমাণিত হয়- কবি শুধু নিজ এলাকা নয়, সারা বাংলার সংগতি-অসংগতি সব কিছুই পাওয়া যায় তার কবিতায়। একবছর সততার সাথে চাকুরী করেন তিনি। ভালো না লাগায় আবার চলে আসেন। কর্মের স্বাদ যেন কোন ভাবেই মিটতে চায় না তার। গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকায় তিনি অল্প কিছুদিন জুতার কারখানায় চাকুরী করেন। তারপর এলাকার কোন এক শিল্পপতির সাহায্যে চলে যান চাঁদপুর। তার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। চাঁদপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলম খানের ম্যানেজার হিসাবে দীর্ঘদিন (প্রায় ৪ বছর) চাকুরী করেন। এরপর ২০১০ সালের দিকে নিজগ্রামে ফিরে আসেন মালিককে না বলে। তারপরই তার জীবনের একাকী পথ চলা শুরু। বর্তমানে তিনি ভাই ভাই গ্র“পের ডিজিটাল টেকনোলজি এর নির্বাহী পরিচালক। শুরু করেন সাহিত্যচর্চা। রচয়িতা সাহিত্য পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি উইড (অসহায় জনগোষ্ঠির জন্য একটি বিদ্যালয়) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। রাসান-২০১২ (একটি শুদ্ধ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
দুই বাংলার বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা ‘রচয়িতা’ সম্পাদনা করায় সত্যি তার সাহস অনুজদের আশ্চর্যের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে ভাবলে বিন্দুমাত্র ভুল হবেনা। রচয়িতা সম্পাদনা করে অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। বয়সে তরুণ এবং সম্পাদক হিসেবে নবীন হলেও তিনি ‘রচয়িতা’ প্রকাশ করে প্রমাণ করে দিয়েছেন, বয়স দিয়ে সাহিত্যিকদের মেধা মাপা যায় না বরং সাহিত্যিকের লেখাই তার জ্ঞানগড়িমা, দক্ষতা কিংবা অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে থাকে। অর্থাৎ বয়স কারো যোগ্যতা কিংবা অভিজ্ঞতা মাপার মাপকাঠি নয়। দেশ-বিদেশের অনেক সুনামধণ্য কবি-লেখকরা লিখেন তার রচয়িতায়। প্রতিবছর কবির নিজের অর্থায়নে ‘রচয়িতা সাহিত্য পরিষদ’ কর্তৃক রচয়িতার বাছাইকৃত কবি লেখকদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন। জামালপুর জেলার জন্য অবশ্যই তা গর্বের বিষয়। তিনি একমাত্র সম্পাদক; যিনি সর্বপ্রথম ইসলামপুরে কবি-লেখকদের সম্মানিত করেছেন। করে যাচ্ছেন। তিনি ‘কাব্য কথা’ লিটলম্যাগ এর নির্বাহী সম্পাদক পদে নিয়োজিত আছেন। সদ্য প্রকাশিত ‘রচয়িতা’ (চার বাংলার ১০০ কবি ও কবিতা) সংখ্যাটি বেশ আলোচনার ঝড় তুলেছে লিটলম্যাগ মহলে। দেশ ও দেশের বাহিরের অনেক সনামধণ্য কবি-লেখকগণ লিখেছেন এ সংখ্যায়। এ যাবৎ ‘রচয়িতা’ প্রসঙ্গে দৈনিক যায়যায়দিন, দৈনিক ইত্তেফাক, বগুড়ার বিখ্যাত দৈনিক করতোয়া, জাতীয় অনলাইন প্রতিমুহূর্ত ডটকম, জাতীয় সাহিত্যবিষয়ক অনলাইন অন্যধারা ডটকম ও মাদারীপুরনিউজ ডটকম-এ আলোচনা স্থান পেয়েছে।
এছাড়াও ডজন খানেক অনলাইন পত্রিকায় এসেছে রচয়িতার আলোচনা। কবি আরিফুল ইসলামকে নিয়ে বিশেষ আলোচনা ছাপা হয়েছে জামালপুরের সনামখ্যাত ‘দৈনিক আজকের জামালপুর’ পত্রিকায়। মাদারীপুর জেলার কালকিনি প্রেস ক্লাবে রচয়িতার মোড়ক উন্মোচন করেছেন রচয়িতার সহ-সম্পাদক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ। দ্বিতীয় বারের মত মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে সহ-সম্পাদক সুমন হাফিজের সভাপতিত্বে ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত শান্ত মরিয়ম এন্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি’র ক্যাম্পাসে। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় কবি তার নিজের গুণে কত বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
তিনি একাধারে কবি, সম্পাদক, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক। তাকে সব্যসাচী বললেও অত্যুক্তি হবেনা। তার লেখা প্রথম উপন্যাস ‘অপেক্ষার শেষ প্রহর...’ ২০১১ সালে প্রগতি প্রকাশনী, আরামবাগ, ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়ে সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উপন্যাসে তিনি সমাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন যা ভাবিয়ে তুলেছে অনেক পাঠকের অন্তর। আলোচনা এসেছে প্রায় ১০-১৫ টি আঞ্চলিক পত্রিকায়। তার লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কালোমুখোশ’। প্রকাশক সৈকত আহমেদ বিল্লালের সাহয্যে প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে। রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে লেখায় তা স্থানীয় প্রশাসনের কারণে বিক্রি নিষিদ্ধ হয়। ‘কালো মুখোশ’ এর একটা কবিতা “মানুষ ঝালাই” এরকম-
“দেশটা তোর বাবার বলেই দেখাস্ যত ক্ষমতা
ভেবে দেখ্ কি হবে তোর ক্ষেপে যদি জনতা”
তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘একাকী জীবন’। নিরেট প্রেম ধরা দিয়েছিল কবির কলমে। বাস্তববাদী প্রেম কতটা নির্মল হয় তা বোঝাতে চেয়েছেন কবি তার একাকী জীবন কাব্যগ্রন্থের “আটটি বছর পর” কবিতায়-
ভুল করেই আবার আসার অপেক্ষায়-
হাতে হাত,আর দু-বাহুর স্পর্শে চরম তৃপ্তি প্রাপ্তির প্রত্যাশায়
যৌবন যেখানে দাঁড়িয়ে হাস্যরসে
শূণ্য অযৌবনের লাঠির উপর ভর করে।”
তার সাহিত্য কর্ম আর জীবন কর্ম সত্যি ভাবিয়ে তোলার মতই।
কবি আরিফুল ইসলাম অনেক জায়গায় সাহিত্যকর্মের জন্য পেয়েছেন অনেক সম্মান। ২০০৬ এ পেয়েছেন চাঁদপুর সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক কবিতার জন্য বিশেষ সনদ ও কবি, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবি সেলিনা পারভিন এর স্বরণে ঢাকা পাবলিক লাইব্ররিতে আয়োজিত বিশেষ ক্রোড়পত্রে কবিতা লেখার জন্য পেয়েছেন বিশেষ সনদ ২০১৩। এ যাবৎ কবির অনেক কবিতা গল্প, উপন্যাস, বাংলাদেশসহ পশ্চিম বঙ্গের অনেক সনামধণ্য লিটলম্যাগে প্রকাশিত হয়েছে।
লেখক: এম এস আই সাগর
কবি, শিক্ষক, সম্পাদক ও আলোচক
ইসলামপুর, জামালপুর
Wynn Las Vegas and Encore - JT Hub
উত্তরমুছুনWynn 경상북도 출장마사지 Las 남원 출장마사지 Vegas and Encore 군산 출장마사지 - Hotel, Address, 구리 출장마사지 Phone Number, Reviews, Amenities, Attire, 경산 출장안마 Leave a review about this hotel. Rating: 5 · 9 reviews