নাফিজ সিদ্দিকী তপু ঃ
১৯৭১ সালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রাজদী গ্রামের এমএ কাদের সিদ্দিকীর ছেলে শহীদ নুরুল আলম পান্না টগবগে তরুণ। বরিশালের গৌরনদী সরকারী কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্র জীবনে তিনি জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে। তিনি ছিলেন কলেজের গরীব ছাত্র-ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রয়োজনে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে হলেও গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতা করতেন। চলা-ফেরায়, কথা-বার্তায় ছিল নিজস্ব স্বকীয়তা। দেশপ্রেমিক, পরোপকারী, আত্মপ্রত্যয়ী, স্বাধীনচেতা ও উদ্যমী এক যুবক।
দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। চলে আসেন নিজগ্রামে। ১৯৭১ এর মে মাসে যোগ দেন ৩০৩ নম্বর রাইফেলে। মেজর মনজুর নেতৃত্বে ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে কালকিনি অঞ্চলে নুরু কবিরাজের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধকালীন তাঁর কাজ ছিল পাকবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করা। তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একাত্তরের ১০ অক্টোবর উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারে যান। সেখানে রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী তাকে আটক করে মাদারীপুর এ.আর হাওলাদার জুট মিলের মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়ে যান। বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যার পর নিশ্চিহ্ণ কওে দেওয়া হয় মৃতদেহ।
আজ স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর তাঁর আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ নিয়ে শুনতে হয় লজ্জাজনক ইতিহাস। তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি। শহীদ পান্নার স্মরণে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নিজ গ্রামে ১৯৭৩ সালে শহীদ পান্না স্মৃতি সংঘ স্থাপিত হয়। যার নিবন্ধন নম্বর ফÑ০০৬৬। সেটাও আজ বিলুপ্তির পথে। অর্থাভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ঘরটি। ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রণীত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত ছিল। কেন কী কারণে চুড়ান্ত তালিকায় তাঁর নাম নেই সে ইতিহাস সবার অজানা। অথচ ১৯৯৫ সালের ২৬ মার্চ প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন জমাদার রচিত ‘মাদারীপুর মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতিকথা’র পঁচিশ পৃষ্ঠায় তাঁর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও শহীদ হওয়ার ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। ১৯৯৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘মুক্তি বার্তা’র দ্বিতীয় বর্ষের দশম সংখ্যায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত আছে। যার মুক্তি বার্তা নম্বর- ০১১০০২০৩৭০।
শহীদ পান্নার ভাই জহিরুল আলম ডালিম ২০০৯ সালের ৩ মার্চ তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বরাবর একটি আবেদন করেন। তার আবেদনের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৎকালীন জেলা প্রশাসক শশী কুমার সিংহ বরাবর একটি আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের ২ বছর পরও শহীদ পান্নার নাম তালিকাভূক্ত হয়নি। এরপর ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের সভায় কালকিনি-ভূরঘাটা সড়কের কাঠেরপোল থেকে বড়বাড়ি পর্যন্ত সড়কের নাম ‘শহীদ পান্না সড়ক’ নামে করার প্রস্তাব গৃহিত হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালের ২ ফেব্র“য়ারি শহীদ পান্নার নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য পুণরায় আবেদন করা হয়। তাই শহীদ পান্নার পরিবার এখনো তাঁর নাম তালিকাভূক্ত হওয়ার প্রত্যাশায় দিন গুণছে। সরকারি চুড়ান্ত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি কেন? এ প্রশ্নের জবাব শুধু সরকারই দিতে পারে।
১৯৭১ সালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রাজদী গ্রামের এমএ কাদের সিদ্দিকীর ছেলে শহীদ নুরুল আলম পান্না টগবগে তরুণ। বরিশালের গৌরনদী সরকারী কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছাত্র জীবনে তিনি জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে। তিনি ছিলেন কলেজের গরীব ছাত্র-ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রয়োজনে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে হলেও গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের সহযোগিতা করতেন। চলা-ফেরায়, কথা-বার্তায় ছিল নিজস্ব স্বকীয়তা। দেশপ্রেমিক, পরোপকারী, আত্মপ্রত্যয়ী, স্বাধীনচেতা ও উদ্যমী এক যুবক।
দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। চলে আসেন নিজগ্রামে। ১৯৭১ এর মে মাসে যোগ দেন ৩০৩ নম্বর রাইফেলে। মেজর মনজুর নেতৃত্বে ৮ নম্বর সেক্টরের অধীনে কালকিনি অঞ্চলে নুরু কবিরাজের কাছে প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধকালীন তাঁর কাজ ছিল পাকবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করা। তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে একাত্তরের ১০ অক্টোবর উপজেলার ফাসিয়াতলা বাজারে যান। সেখানে রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী তাকে আটক করে মাদারীপুর এ.আর হাওলাদার জুট মিলের মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়ে যান। বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। হত্যার পর নিশ্চিহ্ণ কওে দেওয়া হয় মৃতদেহ।
আজ স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর তাঁর আত্মীয়-স্বজনের কাছে খোঁজ নিয়ে শুনতে হয় লজ্জাজনক ইতিহাস। তাঁর নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়নি। শহীদ পান্নার স্মরণে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নিজ গ্রামে ১৯৭৩ সালে শহীদ পান্না স্মৃতি সংঘ স্থাপিত হয়। যার নিবন্ধন নম্বর ফÑ০০৬৬। সেটাও আজ বিলুপ্তির পথে। অর্থাভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ঘরটি। ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রণীত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত ছিল। কেন কী কারণে চুড়ান্ত তালিকায় তাঁর নাম নেই সে ইতিহাস সবার অজানা। অথচ ১৯৯৫ সালের ২৬ মার্চ প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন জমাদার রচিত ‘মাদারীপুর মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মৃতিকথা’র পঁচিশ পৃষ্ঠায় তাঁর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও শহীদ হওয়ার ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। ১৯৯৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘মুক্তি বার্তা’র দ্বিতীয় বর্ষের দশম সংখ্যায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত আছে। যার মুক্তি বার্তা নম্বর- ০১১০০২০৩৭০।
শহীদ পান্নার ভাই জহিরুল আলম ডালিম ২০০৯ সালের ৩ মার্চ তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বরাবর একটি আবেদন করেন। তার আবেদনের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৎকালীন জেলা প্রশাসক শশী কুমার সিংহ বরাবর একটি আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের ২ বছর পরও শহীদ পান্নার নাম তালিকাভূক্ত হয়নি। এরপর ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের সভায় কালকিনি-ভূরঘাটা সড়কের কাঠেরপোল থেকে বড়বাড়ি পর্যন্ত সড়কের নাম ‘শহীদ পান্না সড়ক’ নামে করার প্রস্তাব গৃহিত হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালের ২ ফেব্র“য়ারি শহীদ পান্নার নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য পুণরায় আবেদন করা হয়। তাই শহীদ পান্নার পরিবার এখনো তাঁর নাম তালিকাভূক্ত হওয়ার প্রত্যাশায় দিন গুণছে। সরকারি চুড়ান্ত তালিকায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি কেন? এ প্রশ্নের জবাব শুধু সরকারই দিতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন